বাইশ গজের সঙ্গে বলিউডের মেলবন্ধন বহু পুরনো। নিছক বন্ধুত্বও যেমন আছে, আবার ক্রিকেটারদের সঙ্গে বলি নায়িকাদের ঘর বাঁধার উদাহরণও কম নেই। মনসুর-শর্মিলা থেকে বিরাট-অনুষ্কা, রাহুল-আথিয়া— খেলোয়াড়েরা গাঁটছাড়া বেঁধেছেন বলিউড অভিনেত্রীদের সঙ্গে। এই তালিকার আরও এক চর্চিত জুটি হল হরভজন সিংহ এবং অভিনেত্রী গীতা বসরা।
২০১৫ সালে ঘর বাঁধেন এই জুটি। কিন্তু তার আগে এক দীর্ঘ প্রেমের পথ হেঁটেছেন দু’জনে। ২০০৭ সালে মুক্তি পায় গীতার দ্বিতীয় ছবি ‘দ্য ট্রেন’। গীতার প্রথম ছবি ‘দিল দিয়া হ্যায়’ হিট করেনি। তবে দ্বিতীয় ছবির হাত ধরেই রাতারাতি জনপ্রিয়তা পান গীতা। বলিপাড়ার চর্চায় আসেন তিনি। বলিউডে নিজের জায়গা পাকা করার দিকে সবে গুটি গুটি পায়ে এগোচ্ছিলেন গীতা। আর সেই সময়ই তাঁর জীবনে আসেন হরভজন।
‘দ্য ট্রেন’ ছবির একটি গানের দৃশ্যে গীতাকে দেখে প্রেমে পড়ে যান হরভজন। সারা ক্ষণ শুধু সেই গানই গুনগুন করে গেয়ে চলেছে। কিন্তু গীতাকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনতেন না। এ দিকে গীতার সঙ্গে কথা বলার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। কোনও ভাবেই যোগাযোগ করে উঠতে পারছিলেন না। কিছু দিন আগে একটি সাক্ষাৎকারে হরভজন নিজেই প্রেমের জন্য আকুল হয়ে ওঠার সেই গল্প করেছেন। গীতার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা তাঁকে অস্থির করে তুলেছিল। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে নিজেরই এক সতীর্থের কাছ থেকে গীতার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছিলেন। নম্বর জোগাড় করে গীতাকে মেসেজ করেন হরভোজন। কফি খেতে যাওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। কিন্তু গীতা সেই সময় পাত্তা দেননি।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিদেশের মাটিতে হরভজন আর গীতার দেখা হয়। সম্পর্কের শুরুটা হয়েছিল একেবারে নিখাদ বন্ধুত্ব দিয়ে। তার পর প্রেম, সেখান থেকে বিয়ে। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই গীতার কেরিয়ার অস্তগামী হতে শুরু করে। সংসার শুরুর পরে একটি পঞ্জাবি এবং হিন্দি ছবিতে কাজ করেছিলেন গীতা। কিন্তু কোনওটাই সাফল্যের মুখ দেখেনি। আর সে ভাবে চেষ্টাও করেননি গীতা। স্বামী, সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বলিউড থেকে নিজেকে পুরোপুরি সরিয়ে নেন তিনি। বিয়ের এক বছরের মাথায় কোল আলো করে আসে কন্যাসন্তান। তবে পর্দায় না থাকলেও চর্চায় আছেন গীতা। হরভজনের স্ত্রী— এটাই এখন তাঁর একমাত্র পরিচয়। ২০২১ সালে দ্বিতীয় বার বাবা-মা হয়েছেন। ঘরে এসেছে শিশুপুত্র। ছেলে, মেয়ে আর স্বামীকে নিয়ে গীতার ভরা সংসার এখন। নিন্দুকেরা অবশ্য বলেন, গীতা সম্ভাবনাময় ছিলেন। দেখতেও সুন্দরী। কিন্তু হরভজনের সঙ্গে বিয়ে হওয়াটাই নাকি কেরিয়ারে বাধা হয়ে দাঁড়াল। না হলে এত দিনে অভিনেত্রী হিসাবে গীতা দর্শকের মনে জায়গা করে নিতেন। তবে এ সব নিয়ে অবশ্য কখনও আক্ষেপ করতে শোনা যায়নি গীতাকে।