কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারী বৃষ্টির কারণে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার স্থল পরিবহণ সংযোগ কার্যত ভেঙে গেছে। কবে নাগাদ পুনরায় এই যোগাযোগ চালু হতে পারে তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা। এই পরিস্থিতিতে খাদ্যশস্যসহ পণ্য পরিবহণ নিশ্চিত করতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিয়েছে ত্রিপুরার রাজ্য সরকার। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বাংলাদেশের আশুগঞ্জ নদী বন্দরের মাধ্যমে ত্রিপুরায় পাঠানো পণ্যের মধ্যে খাদ্যশস্য অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ভারতীয় খাদ্য করপোরেশনকে (এফসিআই) নির্দেশ দিতে শনিবার ভারতের কেন্দ্রীয় খাদ্য ও ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী পীযূষ গোয়ালকে চিঠি দিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা।
ভারতের উত্তর কাছাড় পাহাড় এবং মেঘালয়ের দক্ষিণাঞ্চলীয় পাহাড়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রবল বৃষ্টির কারণে
উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে বন্যা ও ভূমিধস দেখা দিয়েছে। এতে করে ভারতের বাকি অংশ থেকে ত্রিপুরা, দক্ষিণ আসাম, মিজোরাম এবং মণিপুরের কিছু অংশের রেল ও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আর এতেই ভারতের বাকি অংশ থেকে এসব এলাকায় পণ্য পরিবহণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারকে লেখা চিঠিতে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেছেন, ‘ভারতের সরকারি বিতরণ ব্যবস্থাপনা (পিডিএস) খাদ্যশস্যের পুরো চাহিদা রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পূরণ করা হয়ে থাকে। কিন্তু লুমডিং-বদরপুর রেলওয়ে সেকশনের পাশাপাশি সড়ক সংযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার কারণে রাজ্যে পিডিএস খাদ্যশস্যের প্রাপ্যতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ত্রিপুরার সরকারের দাবি, হাতে থাকা খাদ্যশস্যের বর্তমান স্টক দিয়ে শুধুমাত্র পাঁচ দিনের জন্য রাজ্যের চাহিদা পূরণ করা যেতে পারে। এটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয় বলেও জানিয়েছে রাজ্যটি।
উলেস্নখ্য, প্রবলবৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় দুই রাজ্য আসাম ও মেঘালয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ জনে। এছাড়া রাজ্য দু’টিতে দুর্যোগপীড়িত মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪০ লাখ।
এছাড়া রাজ্যটির সরকারি সূত্র জানিয়েছে, গত ৬০ বছরে মধ্যে আগরতলায় তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিপাতের জেরে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যার কারণে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।