বিশ্বকাপের চলতি আসরে টানা চার ম্যাচ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় পজিশনে ভারত। সমান সংখ্যক ম্যাচ জিতে ৮ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে থাকায় শীর্ষে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। বৃহস্পতিবার পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৫৬ রান করে বাংলাদেশ। টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৫১ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের সহজ জয় পায় ভারত।
এদিকে গত শনিবার আহমেদাবাদে ভারতের কাছে গো-হারা হারে পাকিস্তান। ম্যাচ হারার পর দিন পাকিস্তানের তরুণ অভিনেত্রী সেহার শিনওয়ারি এক্স হ্যান্ডলে লেখেন— ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতলে আমি ঢাকায় যাব। বাংলাদেশি তরুণের সঙ্গে ফিশ ডিনার ডেটে যাব।
কিন্তু গতকাল ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের হারের পর কিছুটা মনক্ষুণ্ণ হয়েছেন সেই অভিনেত্রী। তার পরও বাংলাদেশ দলের প্রশংসা করে তিনি লিখেছেন, টাইগাররা ভালো খেলেছ। অন্তত তাদের ঘরের মাঠে ইন্ডিয়ান টিমকে তোমরা চ্যালেঞ্জ তো করেছ!
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ভারতের পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে উড়ন্ত সূচনা করে বাংলাদেশ। ১৪.৪ ওভারে দলীয় ৯৩ রানে ফেরেন তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। তিনি ৪৩ বলে ৫টি চার আর ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৫১ রান করে ফেরেন।
এর পর ১৭ বলে মাত্র ৮ রানে ফেরেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ১৩ বলে ৩ রানে ফেরেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ।
ইনিংসের শুরু থেকে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে যাওয়া ওপেনার লিটন দাস ফেরেন দলীয় ১৩৭ রানে। তিনি ক্যারিয়ারের ৮১তম ওয়ানডেতে ১২তম ফিফটির পর সাজঘরে ফেরেন। লিটন ৮২ বলে ৭টি বাউন্ডারির সাহায্যে দলীয় সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন।
লিটন আউট হওয়ার পর পঞ্চম উইকেটে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৫৮ বলে ৪২ রানের জুটি গড়েন তরুণ ব্যাটসম্যান তাওহিদ হৃদয়। তাওহিদ ৩৫ বলে মাত্র ১৬ রানে ফেরেন।
দলীয় ২০১ রানে ফেরেন সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তিনি ৪৬ বলে এক চার আর এক ছক্কায় ৩৮ রান করেন। এই রান করার পথেই বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসানের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে এক হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন মুশফিক।
১৮ বলে ১৪ রান করে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন স্পিনার নাসুম আহমেদ।
সাত নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শেষ দিকে ব্যাটিং তাণ্ডব চালান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিনি মাত্র ৩৬ বল খেলে তিনটি চার আর ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে শেষ ওভারে আউট হন।
শেষ দিকে রিয়াদের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৮ উইকেটে ২৫৬ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন রবিন্দ্র জাদেজা, জাসপ্রিত বুমরাহ ও মোহাম্মদ সিরাজ। একটি করে উইকেট নেন শারদুল ঠাকুর ও কুলদীপ যাদব।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৫৭ রানের টার্গেট তাড়ায় উড়ন্ত সূচনা করে ভারত। অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে আউট করে ভারতের ওপেনিং জুটি ভাঙেন পেসার হাসান মাহমুদ। রোহিতের বিদায়ে ১২.৪ ওভারে দলীয় ৮৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। ৪০ বলে ৭টি চার আর ২টি ছক্কায় ৪৮ রানে ফেরেন রোহিত।
এর পর ভারতীয় শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে সীমানার কাছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন শুভমান গিল। তিনি ৫৫ বলে ৫টি চার আর দুটি ছক্কায় ৫৩ রান করে ফেরেন। গিলের বিদায়ে ১৩২ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় ভারত।
এর পর ভারতীয় শিবিরে ফের আঘাত হানেন মিরাজ। তার বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন শ্রেয়াস আইয়ার। তিনি ২৫ বলে ১৯ রানে ফেরেন।
এর পর লোকেশ রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে ৭৪ বলে ৮৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ৫১ বল আগেই দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন বিরাট কোহলি। দলের জয়ে ১০৩ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন কোহলি।