হাঙ্গেরি বাংলাদেশের সাথে দেশটির বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও গভীর ও সম্প্রসারণে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
শুক্রবার (৫ মে) বুদাপেস্টে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী পিটার সিজ্জারটোর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দেশটি তাদের আগ্রহের কথা জানান।
হাঙ্গেরির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে টিপু মুনশি হাঙ্গেরি সফর করছেন। এটি বাংলাদেশের কোনো বাণিজ্যমন্ত্রীর হাঙ্গেরিতে প্রথম সরকারি সফর।
বিস্তৃত সুযোগ-সুবিধা, আকর্ষণীয় প্রণোদনা এবং অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশসহ এই অঞ্চলে বাংলাদেশের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থা রয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী হাঙ্গেরির ব্যবসায়ী ও কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের আহ্বান জানান।
তিনি হাঙ্গেরির ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নিতে অনুরোধ করেন। বাংলাদেশ সরকার দেশে একশোটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিনিয়োগ-বান্ধব নীতি এবং বিভিন্ন বিদেশি বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত এবং কোটা-মুক্ত প্রবেশাধিকার পেতে ভূমিকা রাখবে।
টিপু মুনশি হাঙ্গেরির সরকারকে ইইউ আলোচনার সময় সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশকে নীতি সহায়তা এবং অপারেশনাল সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন। বিশেষ করে এলডিসি স্ট্যাটাস থেকে উত্তরণের পর বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশাধিকারের ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করেন। এ সময় হাঙ্গেরির বাণিজ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে তার দেশের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সাক্ষাতকালে, উভয় মন্ত্রী বিগত সময়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির বিষয়ে তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের জন্য নতুন উপায় অন্বেষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
এছাড়া দুই দেশের বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ীদের আরও কাছাকাছি আনতে বেসরকারি খাতের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন, যা দুই দেশের মধ্যে বি-টু-বি সংযোগ এবং বাণিজ্য বৃদ্ধিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে বলেও উল্লেখ করেন।
সম্ভাব্য ক্ষেত্রে বিশেষ করে জ্বালানি, বেসামরিক বিমান চলাচল, রেলওয়ে, ফার্মাসিউটিক্যালস, চামড়া, হালকা প্রকৌশল, আইটি পরিষেবা, চিকিৎসা সরঞ্জাম ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, ‘স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম’ প্রোগ্রামে উভয় মন্ত্রী সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন, যার অধীনে ১৪০ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হাঙ্গেরি থেকে সম্পূর্ণ সরকারি বৃত্তি পাবে, যা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা করার সুযোগ দেবে।
বৈঠককালে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রী পিটার সিজ্জারটোর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তার সফল বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করেন।