বাংলাদেশের যেসব ক্রিকেট দর্শক ভারতের ধর্মশালায় যারা খেলা দেখতে গিয়েছেন তারা আরো দুইদিন সেখানে অবস্থান করবেন। ধর্মশালার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি সাকিবরা কোথায় আছেণন সেই খোঁজও নিচ্ছেন। সংবাদ মাধ্যমের যারা গিয়েছেন তারাও বাংলাদেশ দলের পেছনে ছুটছেন। দেশকে এত ভালো একটা জয় উপহার দেওয়া ক্রিকেটারারা কোথায় আছেন, কেমন আছেন কি করছেন। সবকিছুই জানার জন্য ছুটছেন টিম হোটেলে। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। বিসিবি থেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে খেলোয়াড়রা একটু দূরেই থাকবেন। ঢাকা থেকে যোগাযোগ করা হলে বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ টিটু জানিয়েছেন সবকিছু থেকে ক্রিকেট দলকে আলাদা রাখা হয়েছে। আগামীকাল ধর্মশালার এই একই মাঠে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। তাই গতকাল অনুশীলন ছিল না। ঐচ্ছিক অনুশীলন ছিল। করলে করো না করলে নাই। খেলোয়াড়রা কেউ জিম করেছেন।
ভারতের অনুষ্ঠানরত বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৬ উইকেটে আফগানিস্তানকে হারিয়েছে। অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছে বাংলার ক্রিকেটেরা। দেশের মানুষ যেন একটা স্বপ্নযাত্রা শুরু করেছে। যাত্রাটা আরো দূরে যাবে, সেই স্বপ্ন নিয়ে বিসিবি চাইছে ক্রিকেটাররা খেলার মধ্যে থাকুক। সাকিবরা যেন অন্য কিছুতে নজর না দেয়। বাইরে কোনো কিছু যেন ক্রিকেট দলকে না টানে সেজন্য চারদিক থেকে শৃঙ্খলার নিয়মে বেঁধে রাখা হয়েছে। সংবাদ মাধ্যম থেকে দূরেই রাখা হয়েছে। বাইরের জগত থেকে দূরে রাখা হয়েছে সাকিবদের। যেটা আগে কোনো বিশ্বকাপে এভাবে করা হয়নি। দলের পরিকল্পনা কিংবা ভেতরের চাওয়াটা কী, তা জানিয়েছেন তানভীর আহমেদ টিটু। তার এক কথায় পরিষ্কার,‘বাইরে কী হচ্ছে, না হচ্ছে, বাইরের কোনো খবর দলকে দেওয়া হয় না। পৃথিবীর কোথায় কী হচ্ছে, না হচ্ছে, তা নিয়ে এক বিন্দুও ভাবছেন না ক্রিকেটাররা।
খেলোয়াড়রা একটা জয় এনে দেওয়ায় মাঠেই যতটুকু হাসি আনন্দ করেছেন। কিন্তু ড্রেসিং রুম থেকে বেরিয়ে টিম বাসে কিংবা টিম হোটেলে গিয়ে আনন্দ করার মতো কিছু টিটুর চোখে পড়েনি। টিটু দলের সঙ্গেই আছেন। খেলোয়াড়দের কাছেই আছেন। কাছ থেকে দেখা থেকে জানিয়েছেন ওরা প্রফেশনাল। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পা রাখছেন। মাত্র একটা ম্যাচ গেছে। এখানে মনযোগ রাখাটা খুবই জরুরি। তাই খেলোয়াড়দের কথায় আচরণে কিংবা শরীরীভাষা খুব বেশি উচ্ছ্বাস দেখেননি। টিটু বলেছেন,‘যে কোনো জয় মনোবল বাড়ায়। এত বড় একটা বিশ্বকাপ, এখানে সাকিবরা ম্যাচ বাই ম্যাচ হিসাব করছেন। আফগানিস্তান ম্যাচ ভুলে গেছেন সাকিবরা। সামনে কী হবে—তা নিয়ে নতুন আলোচনায় বসছেন।’
এবারের দলে সাকিব, মুশফিক, রিয়াদ, লিটনদের সঙ্গে জুনিয়র ক্রিকেটার আছেন। প্রথম জয়ের পর সিনিয়র-জুনিয়র মেলবন্ধনটা কেমন লাগল কাছ থেকে দেখা টিটুর। ‘সবাই খুব কনফিডেন্ট। এখানে সিনিয়র জুনিয়র বলে কথা না। ওরা হাইলি বুষ্টআপ, অনেকটাই কাঙ্ক্ষিত জয় ছিল। সেটা ভালোভাবে পার হতে পেরেছে সিনিয়র-জুনিয়র সমানভাবেই দেখছেন, বললেন তানভীর আহমেদ টিটু।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে অধিনায়ক সাকিবের ক্রিকেট নেতৃত্ব দেখেছে দেশের মানুষ। যারা সাকিবের নানা ঘটনায় সমালোচনা করতেন তারাও সাকিবকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। দারুণ একটা জয় এনেও সাকিব বলছেন, যেভাবে চেয়েছিলাম, শুরুটা ভালো হয়নি। তবুও খুশি। কারণ প্রচুর পরিশ্রম করেছি। আফগানিস্তানকে হারানোর পর সাকিবকে কেমন দেখা গেছে ? সেই প্রশ্নে টিটু জানিয়েছেন সাকিব কেমন সেটা তো বাংলাদেশের সবার জানা। সাকিবের ডেডিকেশন নিয়ে প্রশ্ন নেই। এখন তো সাকিব নিজেই অধিনায়ক। বিশ্বকাপ মিশনে এসেছেন। নিজের মতো করে কাজ করছেন। নিজের মতো করে হিসাব-নিকাশ করছেন সাকিব।