ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) থেকে ফাল্গুনী হামিদ ও কামরুজ্জামান বাবুর সদস্যপদ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সভায় বাচসাস সদস্য ফাল্গুনী হামিদ ও কামরুজ্জামান বাবুর সদস্যপদ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ সদস্য সৈয়দ মাহমুদ শফিক। সভা পরিচালনা করেন লিটন এরশাদ ও কামরুল হাসান দর্পণ। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর বাচসাস-এর নামে কতিপয় সদস্য যে সাধারণ সভার ঘোষণা করেছে এ ব্যাপারে উপস্থিত সদস্যরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই ঘোষণাকে অবৈধ বলেন। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে বাচসাসের নামে কেউ কোনও কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার চেষ্টা করলে সেটিও অবৈধ গণ্য হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাচসাস পরিচালনা নীতিমালায় দুটি প্রস্তাব সংযোজন করার জন্য সাধারণ সভায় উত্থাপন করা হয়। প্রস্তাব দুটি হচ্ছে ১. বিশেষ সাধারণ সভা, ২. এডহক কমিটি গঠন। এ ছাড়া সাধারণ সভায় গত ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত ‘বিশেষ সাধারণ সভা’য় মেয়াদোত্তীর্ণ ২০১৯-২০২১ মেয়াদের কমিটিকে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে বিলুপ্ত করার পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবুর অনৈতিক কর্মকাণ্ড জড়িয়ে হাজতবাস ও অর্থদণ্ড দেওয়ায় বাচসাস-এর নীতিমালার ৬-এর ‘ক’ ধারা অনুযায়ী সংগঠনের মর্যাদা, সুনাম, স্বার্থ, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিপন্থী হওয়ায় তার সদস্যপদ স্থায়ীভাবে বাতিল করার প্রস্তাব করা হয়।
একই সঙ্গে সংগঠনের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ, অসাংগঠনিক আচরণ ও কার্যক্রমের জন্য ফাল্গুনী হামিদের সদস্যপদ স্থায়ীভাবে বাতিলের প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া বিলুপ্ত কমিটি কর্তৃক বাচসাস-এর দুইবারের সভাপতি ও অন্যতম সিনিয়র সদস্য আবদুর রহমান, দুইবারের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল করিম নিশান, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হামিদ মোহাম্মদ জসিম এবং অর্থ সম্পাদক নবীন হোসেনের সদস্যপদ বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রস্তাব করা হয়।
‘বিশেষ সাধারণ সভা’য় এডহক কমিটির গত ৬ মাসে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনাসহ অন্যান্য কার্যক্রমের আর্থিক হিসাব উত্থাপন করা হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ ও বিগত কমিটির অর্থ সম্পাদক মঈন আবদুল্লাহর কাছে এডহক কমিটি’র পক্ষ থেকে তাদের মেয়াদকালের সংগঠনের যাবতীয় হিসাব বুঝিয়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হলে তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানান বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সাধারণ সভায় নেয়া এই প্রস্তাবনাগুলো এডহক কমিটির সদস্য সচিব কামরুল হাসান দর্পণ সাধারণ সভায় উত্থাপন করেন। সভার সভাপতি সৈয়দ মাহমুদ শফিক প্রস্তাবনা পাস করার ব্যাপারে সদস্যদের সম্মতি জ্ঞাপনের আহ্বান জানালে সর্বসম্মতিতে প্রস্তাবগুলো পাস করা হয়।
সাধারণ সভায় নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নির্বাচন কমিশনার এরফানুল হক নাহিদ যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিগত ও বিলুপ্ত কমিটির কাছ থেকে কোনো ধরনের সহায়তা না পাওয়াসহ তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। সাধারণ সদস্যরা বিগত ও বিলুপ্ত কমিটির এহেন আচরণে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন।
সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখেন সাংবাসিক নেতা আব্দুর রহমান, রাজু আলীম, হাসান হাফিজ, শামসুদ্দিন আহমেদ চারু, সলিমুল্লাহ সেলিম, মমিন রহমান, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন, নাসিম রুমি, খান অখতার হোসেনসহ অন্যান্য সদস্য। এছাড়া বক্তব্য রাখেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ফরিদ বাশার, নির্বাচন কমিশনার আবুল হোসেন মজুমদার, বাদল আহমেদ, রিমন মাহফুজ, এডহক কমিটির আহ্বায়ক হাবিবুল হুদা পিটু। সদস্য সচিব কামরুল হাসান দর্পণ এডহক কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন এবং তা সর্বসম্মতিতে অনুমোদিত হয়। সাধারণ সভায় প্রায় আড়াই শতাধিক সদস্য উপস্থিত হন।