দলীয় সূত্র জানায়, আজকের সমাবেশের পর আগামী দু-এক দিনের মধ্যে গণ-অনশন কিংবা বিক্ষোভ সমাবেশ অথবা মিছিলের মাধ্যমে আন্দোলনের কর্মসূচি শুরু হতে পারে। এরপর পদযাত্রা, অবস্থান ধর্মঘট এবং সবশেষে ঘেরাও কর্মসূচিতে যাবে দলটি।
বছরজুড়ে নানা কর্মসূচি পালন করলেও এক দফা আন্দোলন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজকের সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। গত কয়েক দিন ধরে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল, ঢাকা মহানগর, জেলা ও বিভাগীয় নেতাদের সঙ্গে প্রস্তুতি সভা করেছেন দলের শীর্ষ নেতারা। সভায় ঢাকা মহানগর ও ঢাকা বিভাগের জেলাসমূহকে সমাবেশে জনসমাগম করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গত বছর ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে বিএনপি সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, দলের চেয়ারপারসনের মুক্তিসহ ১০ দফা আন্দোলন ঘোষণা করে। এর ভিত্তিতে এত দিন ধরে আন্দোলন করে আসছে দলটি।
বিএনপি নেতারা জানান, আজকের সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকা বিভাগের অনেক জেলা থেকে গতকাল রাতেই নেতাকর্মীরা রাজধানীতে এসে পৌঁছেছেন। আশপাশের জেলা থেকে নেতাকর্মীরা আজ সকালে রওনা হয়ে সমাবেশে যোগ দেবেন।
এক দফা আন্দোলন ঘোষণায় যা বলা হবে : এক দফা আন্দোলন ঘোষণায় বলা হবে, ভোটাধিকার হরণকারী সরকারের পদত্যাগ, বিদ্যমান সংসদের বিলুপ্তি; নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে তার অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা; বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, মিথ্যা-গায়েবি মামলা প্রত্যাহার, ফরমায়েশি সাজা বাতিল এবং সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কারের মাধ্যমে জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি, ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে রাজপথে সক্রিয় বিরোধী রাজনৈতিক জোট ও দলের বৃহত্তর গণ-আন্দোলন গড়ে তোলা ও সফল করার ঘোষণা প্রদান করছে।
সমমনাদের সঙ্গে বৈঠক : এক দফা আন্দোলন কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে গতকালও বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি বাংলাদেশ গণ-অধিকার পরিষদ (নুরুল হক নুর), গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য ও সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে।
বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা মনে করি, আন্দোলনের এক দফা ও রাষ্ট্র মেরামতে রূপরেখা ঘোষণার মধ্য দিয়ে জাতি আশান্বিত হবে। আন্দোলন আরো শক্তিশালী হয়ে সরকারের পতন ঘটাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’
মাঠে থাকছে না জামায়াত : ১০ দফা দাবির সঙ্গে জামায়াত একাত্মতা প্রকাশ করে যৌথ ঘোষণা দিলেও আজকের কর্মসূচিতে থাকছে না দলটি। জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ জানান, আগামী ১৫ জুলাই সিলেটের সমাবেশের মাধ্যমে তাঁদের মহানগরভিত্তিক সমাবেশ শুরু হচ্ছে। আনুষ্ঠানিকভাবে এক দফার ভিত্তিতে কর্মসূচি পালনের বিষয়ে তাঁরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।
তবে অন্যান্য দল ও জোট আজ বিকেল ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, প্রেস ক্লাব, বিজয়নগর, পুরানা পল্টনসহ আশপাশের এলাকায় সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করে অভিন্ন ভাষায় একই কর্মসূচি ঘোষণা করবে।