বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ভেবেছেন আপনার কর্মীরা নির্দ্বিধায় এসব অপকর্ম করে যাবে আর বিএনপি চুপ করে থাকবে-এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। আমরা প্রতিটি রক্ত কণার উপযুক্ত জবাব দিব।
তিনি বলেন, প্রতিটি আঘাতের উপযুক্ত জবাব দিব। আমাদের কোনো র্যাব নেই, পুলিশ নেই, নিরস্ত্র আমরা দুই হাত দিয়ে গুলির সামনে বুক পেতে দিতে পারি। তেমনি চরম প্রতিরোধের দিকেও এগিয়ে যেতে পারি।
শনিবার রাত ৮টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, বরকত উল্লাহ বুলুর রক্ত কী জাতীয়তাবাদী শক্তি মেনে নেবে? আজকে তাবিথ আউয়ালের রক্ত কী মেনে নেবে? আজকে সেলিমা রহমানের উপর উপর্যুপরি যে আঘাত এটা কী মেনে নেবে? এটা কোনদিন মেনে নেবে না। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায়ের জন্য লড়াই করছিলাম। কিন্তু আমরা গান্ধীবাদে বিশ্বাস করি না, আমরাও প্রতিরোধ করতে জানি।
আওয়ামী লীগ সভাপতির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আমাদের আজকে অনেক রক্ত ঝড়েছে। ১৪ বছরে ক্রমাগত অনেক প্রাণ কেড়ে নিয়েছেন। অনেককেই পঙ্গু করেছেন। এই ২২ শে আগস্ট থেকে আজ পর্যন্ত বহু নেতাকর্মী, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের অনেক নেতাকর্মীকে অন্ধ করেছে আপনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই সমস্ত অভিশপ্ত সমাজ আপনি তৈরি করেছেন।’
রিজভী বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি ছিল বনানীতে। সেই কর্মসূচিও আওয়ামী লীগের সহ্য হয়নি। সেখানেও বর্বর হামলা চালিয়েছে তারা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য যিনি সরকার চালিয়েছেন- সেলিমা রহমান, তিনিও হামলা থেকে রেহাই পাননি। তাবিথ আউয়াল, শ্যামা ওবায়েদ সহ অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছে। কর্মসূচি শেষ হওয়ার সাথে সাথে আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনী ইট পাটকেল মারা শুরু করে। তাবিথ আউয়াল এক পর্যায়ে একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে। সেখানে ঢুকেও তার ওপর হামলা করে। সে এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। সেখানে শ্যামা ওবায়েদ আহত হয়েছে, ছাত্রদল যুবদলের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে পেটুয়া বাহিনী। গত ১৪ বছরে পেলে পোষে একটা নেকড়ে বাহিনী তৈরি করা হয়েছে। তাদেরকে লেলিয়ে দিয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রকামী মানুষদের বিরুদ্ধে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু কুমিল্লা থেকে আসার সময় তার ওপর আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনী হামলা করেছে। তার গোটা শরীর থেঁতলে দিয়েছে। তার মাথা পুরোটাই ব্যান্ডেজ করা, যোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, এ হামলার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করি এবং অবিলম্বে এদের যদি বিচারের আওতায় আনা না হয়, তাহলে আমরা অন্য ভাষায় কথা বলতে বাধ্য হব।
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে আরও বলেন, আজকে সারাদেশে বিএনপির কর্মসূচিতে এই অবৈধ নিশি রাতের পেটুয়া বাহিনী এবং তাদের দলীয় সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির জাতীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মীদের উপর পরিকল্পিতভাবে রক্তাক্ত হামলা করেছে। তাদের মধ্যে অনেকেই এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। ঢাকার বনানীতে বিএনপির পূর্বঘোষিত একটি মোমবাতি প্রজ্জলন কর্মসূচিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা তাবিথ আউয়াল সহ অনেককেই নেকরের মতো হামলা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, তারিকুল ইসলাম তেনজিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
