নম্বর ক্লোন করে বিকাশের এজেন্টকে ফোন দিয়ে অ্যাকাউন্ট আপডেটের কথা বলে একটি চক্র হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশের ডিস্ট্রিবিউটর সেলস অফিসারের (ডিএসও) সহযোগিতায় টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-বিকাশের ডিএসও শাহরিয়ার নাফিজ ওরফে মিল্টন, মো. রিপন মিয়া, মো. ইউসুফ মিয়া এবং এই চক্রের হোতা মাহবুব কাজী। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে ৯টি মোবাইল ফোন এবং ৬টি সিম, বিকাশ প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত আরও ৫১টি বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সিমকার্ড জব্দ করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মালিবাগে সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ এ তথ্য জানান।
সিআইডি জানায়, একজন বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গত বুধবার দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালায় সংস্থার সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি)।
অভিযানে জামালপুর জেলা থেকে বিকাশের প্রাক্তন ডিএসও শাহরিয়ার নাফিজ ওরফে মিল্টন ও মো. রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে মো. ইউসুফ মিয়া নামের আরেকজনকে ফরিদপুরের মানিগ্রাম থেকে এই বিকাশ প্রতারণার চক্রের হোতা মাহবুব কাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাইবার পুলিশ সেন্টারের (সিপিসি) বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, বিকাশের ডিএসওদের সহযোগিতায় ডিএসওদের নম্বর ক্লোন করে ডিএসওর কর্ম এলাকার আওতাধীন বিকাশের এজেন্টকে ফোন দিয়ে অ্যাকাউন্ট আপডেটের কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করে এই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটি।
তিনি বলেন, এই চক্রের হোতা মাহবুব কাজী একজন পেশাদার বিকাশ প্রতারক। বিকাশে প্রতারণা করার জন্য তিনি একদিন ফোন করেন গ্রেপ্তারকৃত শাহরিয়ার নাফিজ মিল্টনকে। পরে কথায় কথায় তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে মাহবুব কাজীর চাহিদা মোতাবেক মিল্টন তার ডিস্ট্রিবিউটর হাউজের আওতাধীন বিকাশ এজেন্ট নম্বর মাহবুব কাজীকে সরবরাহ করে। বিনিময়ে তিনি মাহবুবের কাছ থেকে কমিশন পেতেন। পরবর্তীতে শাহরিয়ার নাফিজ ওরফে মিল্টনের মাধ্যমে বিকাশের আরেক ডিএসও রিপন মিয়াও এই কাজে জড়িয়ে পড়েন।
রেজাউল মাসুদ বলেন, গ্রেপ্তার মাহবুব কাজীর দেওয়া বক্তব্য এবং তার কাছ থেকে জব্দকৃত মোবাইল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তিনি এই কাজে খুবই পারদর্শী। এই ভুক্তভোগী ছাড়া আরও অনেক বিকাশ এজেন্ট ও বিকাশ ব্যক্তিগত নম্বর থেকে এই বিকাশ প্রতারক চক্র গত তিন মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই কাজের জন্য তারা পেইড ভার্শন ক্লোনিং অ্যাপস ব্যবহার করে বিকাশের ডিএসওদের নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন এজেন্টদেরকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে আসছে।