তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) মনে করে বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হলে তা সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে। এবং তাদের একবাক্যে অভিমত- জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে দেশের অগ্রগতি অভাবনীয়।’
ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি’র আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের পাঁচ সদস্য ৬-৯ আগস্ট দিল্লি সফর শেষে বুধবার ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সফর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এ কথা বলেন।
নির্বাচনের চার মাস আগে বিজেপির আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের এই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অভিহিত করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে আন্তরিকতাপূর্ণ বৈঠকগুলোতে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সন্ত্রাসমুক্ত ভূখণ্ডনীতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বিএনপির আমলে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উদ্দেশ্যে পাচার হতে যাওয়া দশ ট্রাক অস্ত্র, কক্সবাজারে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে সেই সময়গুলোর মতো অবস্থা এখন আর নেই, বলেন তারা। নিজ দেশের এক ইঞ্চি ভূমিও প্রতিবেশী দেশে অস্থিতিশীলতার কাজে যেন ব্যবহৃত না হয়, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেওয়া পদক্ষেপ ও তার কার্যকারিতায় আন্তরিক সন্তোষ জানান নেতারা।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘পাশাপাশি আমরা তাদেরকে জানয়েছি, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ। এর ফলেই প্রতিবছর পূজামন্ডপের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, সব ধর্মের উৎসব সবার উৎসব হয়, পয়লা বৈশাখে সর্বজনীন উৎসব হয়, চাকরিজীবীরা পুরো এক মাসের বেতনের সমান উৎসব ভাতা পান।’ এ সব তথ্যে তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভিতের গভীরতা অনুভব করেছেন, উল্লেখ করেন হাছান।
প্রতিনিধি দলনেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকের বক্তব্য দিয়ে শুরু হওয়া এ ব্রিফিংয়ে প্রতিনিধিদের মধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, আরমা দত্ত এমপি ও মেরিনা জাহান কবিতা এমপির সঙ্গে দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এবং উপ-প্রচার সম্পাদক আবদুল আউয়াল শামীম উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের দলটি এ সফরে ৭ আগস্ট ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপি’র প্রেসিডেন্ট জেপি নাড্ডা, জেনারেল সেক্রেটারি বিনোদ তড়ে এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয় শঙ্করের সাথে এবং ৮ আগস্ট ভারতের পার্লামেন্টের লিডার অভ দি আপার হাউজ ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুষ গয়াল এবং ভারতে জি-২০ সম্মেলনের কো-অর্ডিনেটর রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সাথে বৈঠক করেছেন।
যুব মহিলা লীগের কাছ থেকে মানুষের পাশে দাঁড়ানো শিখুন: বিএনপিকে তথ্যমন্ত্রী
ধানমন্ডিতে সংবাদ সম্মেলন শেষে এ দিন তথ্যমন্ত্রী রাজধানীর শাহবাগে যুব মহিলা লীগের ডেঙ্গু প্রতিরোধ কর্মসূচিতে যোগ দেন। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তারা বড় একটা রাজনৈতিক দল হয়েও মানুষের প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়ায় না। কিন্তু আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন যুব মহিলা লীগও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এদের কাছ থেকে বিএনপির শেখা উচিত।’
মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘আমি বিএনপিকে বলবো- সাজগোজ করে বিদেশি দূতাবাসে ধরণা না দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান। অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ ও গাড়ি-ঘোড়া না পুড়িয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান, পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা না করে মানুষের পাশে দাঁড়ান।’
যুব মহিলা লীগ সভাপতি আলেয়া সারওয়ার ডেইজি, সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি এবং সদস্যরা কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন।