দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জঙ্গিবাদ দমন উন্নয়নে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লক্ষ্য অভিন্ন বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা।
তিনি বলেছেন, ভারত সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এখন এক নতুন উচ্চতায়। দুই দেশের স্বার্থ রক্ষায় ভারতীয় বিজেপি পার্টি ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে কাজ করতে চাই।’
বিজেপির কেন্দ্রীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক মতবিনিময়ে একথা বলেন।
সোমবার (৭ আগস্ট) সকালে বিজেপির কেন্দ্রীয় সভাপতি নয়াদিল্লির নিজ বাসভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে গত প্রায় ১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক, দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সংসদ সদস্য এরোমা দত্ত ও মেরিনা জামান।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ভারতের ক্ষমতাসীন দলের সভাপতি ও প্রবীন রাজনীতিবীদ জে পে নাড্ডার সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ ও আন্তরিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত আলোচনায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু স্থান পায়।
এসময় জে পি শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন সব উন্নয়ন সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় দৃষ্টান্ত যা দেখে আমরাও খুশি।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বাংলাদেশেই নয় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। বর্তমান সরকারের আমলে দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর সমাধান হয়েছে। আমরা এ সম্পর্ক ধরে রাখতে দুই দেশের মধ্যকার সরকারের চলমান সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চাই।’
বিজিপি সভাপতির এই আশাবাদকে বাস্তবে রপ দিতে সফররত আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দও একই সুরে কথা বলেন। আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। এই নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
আওয়ামী লীগ নেতারা আরও বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জঙ্গি দমন এবং উন্নয়নে আগামী নির্বাচনের ফলাফল প্রভাব ফেলবে। বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয় আমাদের কাছে প্রতিবেশী প্রথম। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেকটা আবেগ ও বন্ধুত্বের। আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা ঐতিহাসিক।’
বিজেপির সভাপতির সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকের আগে দিল্লীর বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলাদা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও অত্যন্ত খোলামেলা আলোচনায় দুই দেশ ও দুই রাজনৈতিক দলের বন্ধুত্বের বিষয়টি গুরুত্ব পায়।
বৈঠকে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিনোদ বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের মধ্যে বর্তমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক যে কোন সময়ের চেয়ে অন্য মাত্রায় যা এক সোনালী অধ্যায়। আমাদের দুই বন্ধুপ্রতীম দল সবসময় এসম্পর্ক অটুট রাখতে কাজ করে যাবো।’
পরে জাতীয় সংসদ ভবনে ভারত সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জন শংকরের সঙ্গেও সফররত আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের সরকার প্রধান শেখ হাসিনার সরকারের আমলে দুই দেশের মধুর সম্পর্ক অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে আলাদা।’