পাহাড়ি ঢলে ও বৃষ্টির কারণে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বেড়েই চলছে। বর্তমানে নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে জেলার অভ্যন্তরীণ করতোয়া, ফুলজোড় ও বড়াল নদী চলনবিলসহ জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্রতিটি খাল বিলে পানি বাড়ছে। এতে সিরাজগঞ্জবাসী আতঙ্কে রয়েছে।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর ) সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে কাজিপুরের মেঘাই পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, নতুন করে নদীর পানি বাড়তে থাকায় বন্যা প্লাবিত হওয়ায় পাঁচ উপজেলার প্রায় ৪২টি ইউনিয়নে চরাঞ্চলের নিম্নভূমি তলিয়ে গেছে। পানি উঠতে শুরু করেছে এসব অঞ্চলে। ইতোমধ্যে সদর উপজেলার কাওয়াকোলা, মেছড়া, কালিয়া হরিপুর, সয়দাবাদ ইউনিয়নের মানুষগুলো দুর্ভোগে রয়েছে।
চৌহালী উপজেলার ১০১৫টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবতর জীবনযাপন করছে। দফায় দফায় পানি বাড়ার ফলে এ অঞ্চলে ফসলের চাষাবাদও ব্যহত হওয়ায় বিপাকে পড়েছে কৃষকরা।
জেলার শাহজাদপুর, চৌহালী ও কাজিপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলেও অনেক রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে। এতে বিশেষ করে চরাঞ্চল এলাকার মানুষের দুঃখ দুর্দশা বাড়ছে। ভাঙন রোধে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান জানান, কতোগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে বা ক্লাস বন্ধ আছে এ সব তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
চৌহালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হেকমত আলী জানান, ইতোমধ্যেই এ উপজেলার প্রায় সাড়ে আট হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব পরিবারের তালিকা তৈরি করে সহায়তার জন্য জেলা অফিসে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিৎ কুমার সরকার জানান, যমুনা নদীর পানির আবারও বাড়ছে। এতে যমুনা নদী তীরের কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর, চৌহালী ও সিরাজগঞ্জ সদরের নিম্নাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলের অনেক গ্রাম এখন পানিতে ভাসছে।
এ বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান বলেন, বন্যা ও ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা পাওয়া গেলে ত্রাণ সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হবে।