গাজা থেকে ভাইরাল হওয়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, ফিলিস্তিনি যুবক-পুরুষদের বিবস্ত্র করে শুধু অন্তর্বাস পরিয়ে গণহারে আটক করছে ইসরায়েলি সেনারা। তাদের চোখ বেঁধে রাস্তায় হাঁটু গেড়ে বসিয়ে রাখতে দেখা গেছে। আরেকটি ছবিতে দেখা গেছে আটককৃতদের সামরিক কার্গোতে জোর করে তোলা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আটকের সঠিক পরিস্থিতি ও তারিখ পরিষ্কার নয়, তবে কয়েকজন বন্দীর পরিচয় তাদের সহকর্মী বা পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত করেছিল।
এক আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলেছে। আটককৃতদের মধ্যে অধিকাংশই বেসামরিক, জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
ইউরো-মেডিটারিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর আটকের একটি ছবি পোস্ট করেছে। বৃহস্পতিবার সংস্থাটি তাদের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিককে আটক করেছে ও গুরুতরভাবে নির্যাতন করেছে। ইউরো-মেড মনিটর রিপোর্ট পেয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী ডাক্তার, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও বয়স্ক পুরুষসহ বাস্তুচ্যুত লোকদের বিরুদ্ধে গণহারে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করেছে।’
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। ইসরায়েলি মিডিয়া ছবিগুলোকে হামাস সদস্যদের আত্মসমর্পণের চিত্র হিসেবে দাবি করেছে। তবে এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ তারা দিতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার একটি সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক আইডিএফের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারিকে ছবিগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক বন্দী ও হামাস সদস্যদের ছবি দেখেছি। তাদের স্থল অভিযানের সময় গ্রেপ্তার করেছিল আইডিএফ।’
হাগারি বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে দেখছি কার সঙ্গে হামাসের সম্পর্ক আছে, আর কার নেই। আমরা তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করি ও জিজ্ঞাসাবাদ করি। আমাদের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা প্রতিটি দুর্গ ভাঙতে থাকব।’
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে লন্ডনভিত্তিক প্যান অ্যারাবিক সংবাদ মাধ্যম আল-আরাবি আল-জাদেদ বলেছে, ছবির কারণে তাদের একজন সংবাদদাতা ও তার পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী সাংবাদিক ও গাজায় ‘দ্য নিউ আরব’ অফিসের পরিচালক, আমাদের সহকর্মী দিয়া আল-কাহলোতকে বেইত লাহিয়ার মার্কেট স্ট্রিট থেকে তার আত্মীয় ও ভাইসহ অন্যান্য বেসামরিকদের গ্রেপ্তার করেছে। দখলদাররা ইচ্ছাকৃতভাবে গাজাবাসীকে জোর করে বিবস্ত্র করেছে। তাদের তল্লাশি ও অজানা গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার আগে লাঞ্ছিত করেছে। ঘটনার ছবি ও ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছে। ইসরায়েলি সেনারা অপরাধমূলক ও অপমানজনক উপায়ে কয়েক ডজন গাজাবাসীকে গ্রেপ্তার করছে।’
আল-আরাবি আল-জাদেদ-এর প্রধান সম্পাদক হুসাম কানাফানি বিবৃতিতে বলেছেন, আল-কাহলোত ও তার পরিবার এখনও নিখোঁজ।