আজ আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রামবাংলায় হারিয়ে যেতে বসেছে মোরগ যুদ্ধ, হাডুডু, ডাংগুটি, ফেট্টিং, চাকতি খেলা, হাড়িভাঙ্গা, গোল্লা ছুট, লবণ কোঠা, পাগারে-পুকুরের পানিতে টগা খেলাসহ বিভিন্ন ধরনের খেলা। যে খেলায় পৃথকভাবে শিশুসহ শিশুর বাবারাও অংশগ্রহণ করতেন। পড়াশোনা এবং কাজের ফাঁকে সাধারণত বিকেল বেলায় উল্লিখিত খেলা অনুষ্ঠিত হতো গ্রামবাংলার আনাচে-কানাচে। এর জন্য বাবা-মায়ের শাসন আর স্ত্রীর ভেচকী সহ্য করেও খেলায় অংশগ্রহণ করতে দ্বিধা করতেন না খেলোয়াররা। আর গ্রামের শিশু-কিশোর এমনকি বৃদ্ধ নারী পুরুষ জর্দা আর পানের কৌটা নিয়ে খেলা পরিদর্শনে ছুটে যেতেন অনাবাদি জমি বা খেলার মাঠে। তাদের হাতের তালি আর মুখের জয়ধ্বনি খেলোয়ারদের আনন্দ যোগাতো।
কালের আবর্তে সেই সব খেলার স্থান আজ দখল করে নিয়েছে ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, ব্যাটমিন্টন। তাছাড়া অতীতের খেলার পরিবর্তে মোবাইলে চলছে পাপজি, ফ্রি ফায়ারসহ বিভিন্ন ধরনের খেলা। যেখানে ধনাঢ্য পরিবারের সদস্যরা স্থান পেলেও গ্রামবাংলা দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা তাদের খেলা দেখার জন্য ছুটে যায় প্রতিবেশীর ঘরের টিভির কাছে। কিন্তু শতবাধা বিপত্তিকে উপেক্ষা করে গ্রামবাংলায় শীত মৌসুমে জমে উঠে লাঠিবাড়ী খেলা।
স্মৃতিচারণ করে সিরাজগঞ্জ দিঘলকান্দি গ্রামের ৮০ বছরের আজহার আলী বলেন, আগের খেলাতো দূরের কথা, খেলার নামও অনেকে ভুলে গেছেন।
কামারখন্দের শ্যামপুর গ্রামের মাজেম মন্ডল (৭৬) স্মৃতিচারণ করে বলেন, বাবারে, ডাংগুটি খেলা জন্য ছোটবেলায় কত মাইরখাছি বাবা-মায়ের আতে। এহুন যে খেলা বাড়াইছে, কিচ্ছুই বুঝি না। টিভিবিলা চায়া থাইকা বাইরা বারি দেহি।