অসংখ্য দেশি-বিদেশি কর্মীর শ্রম-ঘামে বাস্তবায়ন হয়েছে পদ্মা সেতু। নির্মাণের বিশাল এই কর্মযজ্ঞে ইশরাত জাহান নামটি লেখা থাকবে অনন্য নজির হিসেবে। কারণ, একমাত্র বাঙালি নারী প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কাজ করেছেন এই প্রকল্পে।
দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে পাস করার পর ইশরাত জাহান ২০১৫ সালে যখন পদ্মা সেতুর ঠিকাদার চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনে যোগ দেন, তাঁর বয়স মাত্র ২০ বছর।
পদ্মাপাড়ে প্রায় আধা কিলোমিটার লম্বা কারখানায় ইশরাত সেতুর প্রতিটি পাইলিং পাইপের মেজারমেন্ট করেছেন। চীনের বিশাল বিশাল ইস্পাতের পাতগুলো ১ হাজার ৫০০ টন ক্ষমতার বেন্ডিং মেশিনে মুড়িয়ে সিলিন্ডার বানানো হয়। ছোট ছোট সিলিন্ডার আগুনের তাপে জোড়া লাগিয়ে পাইলিং পাইপ তৈরি করা হয়।
ইশরাত জাহান স্বপ্নেও ভাবেননি, পদ্মা সেতুর মতো বিশাল প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ পাবেন। একমাত্র নারী বাঙালি কর্মী; তার ওপর পরিবার-পরিজন ছেড়ে কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের ডরমিটরির সেই দিনগুলো তাঁকে খুবই আবেগতাড়িত করে।
ইশরাত জাহান বলেন, পদ্মা সেতুর প্রতিটি পাইলিং পাইপের মেজারমেন্ট আমার হাতে করা। এক মিলিমিটার এদিক-সেদিক হয়নি। প্রতিটি সিলিন্ডার সঠিক মাপে তৈরি করেছি।তিনি বলেন, প্রকল্পে আমার সঙ্গে আরও তিন চীনা নারীকর্মী থাকলেও তাঁরা বাংলা কিংবা ইংরেজি বুঝতেন না। এ জন্য দীর্ঘদিন একই ডরমিটরিতে থেকে কাজ করলেও ‘ইয়েস’, ‘নো’ এবং ‘ভেরি গুড’ ছাড়া কোনো আলাপ হয়নি।
পদ্মা সেতু নিয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশে ইশরাত জাহান বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্পে আমারও সামান্য অবদান আছে- এটি মানুষকে বলতে খুবই ভালো লাগে। বলতে পারি, আমিও ছিলাম বিশাল এই কর্মযজ্ঞে।