প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শুরু হলো মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা। এ বছর এই স্বপ্নযাত্রায় অংশগ্রহণ করছে ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থী। গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪। এটা আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে আনন্দের যে শিক্ষার্থীদের ঝরে যাওয়া ক্রমান্বয়ে কমছে।
পরীক্ষা-পরবর্তী ফলাফল প্রকাশিত হলে আমরা অনেক মেধাবী মুখ খুঁজে পাই। মিডিয়ার কল্যাণে কিছু মেধাবী পেয়ে থাকি, যারা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বা বলা চলে শারীরিক নানান জটিলতার মধ্যেই সংগ্রাম করে ভালো ফলাফল করে এবং সেই ফলাফল রীতিমতো অবাক করার মতো। কেউ মুখ দিয়ে, কেউ পা দিয়ে বা বিশেষ মাধ্যমে পরীক্ষার খাতায় লিখে যোগ্যতার প্রমাণ রাখছে। তাদের এই অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও সফলতাকে আমরা অভিনন্দন জানাই। কিন্তু বিগত কয়েক বছরের আলোকে যদি লক্ষ করি, এই প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের একটা পর্যায়ে আর সফলতা চোখে পড়ে না। কে কোথায় আছে, কেমন আছে সেটাও আমরা জানি না। হয়তো সমাজের নানান হেয় প্রতিপন্ন কথা এবং চারদিকের অসহযোগিতার কারণেই অনেকে পড়াশোনা ছেড়ে দেয় বা ছাড়তে বাধ্য হয়। এতটুকু খুব জোর গলায় বলা যায়, যে প্রতিভা নিয়ে এরা জন্মায়, তার সাপেক্ষে এদের সফলতা নেই বললেই চলে। এর দায় নিঃসন্দেহে আমাদের সমাজের, আমাদের রাষ্ট্রের সর্বোপরি যারা তাদের সব আত্মবিশ্বাস ভেঙে চুরমার করে দেয় এবং নানাভাবে অসহযোগিতা করে থাকে তাদের।
সুতরাং, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এমন মেধাবীদের খোঁজ রাখা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাদের সব সুযোগ-সুবিধা দিয়ে পড়াশোনা করানো, মেধার যথাযথ বিকাশ ও প্রয়োগ ঘটানোর পরিবেশ তৈরি করাও রাষ্ট্রের পাশাপাশি প্রতিটা নাগরিকদের নৈতিক দায়িত্ব। বিশেষ এই মেধাবীদের সব সময় মূল্যায়ন হোক। তাদের পড়াশোনা ও কর্মপরিবেশ তৈরির জন্য সরকারের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি সবাইকে বিশেষ এই মেধাবীদের প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সবাইকে মাথায় রাখতে হবে, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা যেন হারিয়ে না যায়।