কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। কিন্তু বিশ্বকাপের জন্য কাজ করা অনেক শ্রমিকের বেতন এখনো বকেয়া রয়ে গেছে। জাতিসংঘের শ্রম বিষয়ক সংস্থা এই অভিযোগের কথা জানিয়েছে
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও জানিয়েছে, কাতারে কাজ করা শ্রমিকরা গত এক বছরের হিসাবে দ্বিগুণ অভিযোগ করেছেন, যার সংখ্যা ৩৪ হাজার ৪২৫। একটি অনলাইন প্ল্যাটফরমে এই অভিযোগগুলো জানিয়েছেন শ্রমিকরা। অধিকারের বিষয়ে দুর্বল অবস্থানে থাকা দেশটিকে তাই এ বিষয়ে নজর দিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছে আইএলও।প
আইএলওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘শ্রমিকদের করা অভিযোগগুলো মূলত তাদের বেতন এবং চুক্তি শেষের সুযোগ-সুবিধা না পাওয়া সংক্রান্ত। এমন অভিযোগও এসেছে যে শ্রমিকদের বার্ষিক ছুটি দেওয়া হয়নি বা ছুটির সময়ে বেতন দেওয়া হয়নি।’ শ্রমিকদের করা ১০ হাজার ৫০০ অভিযোগ শ্রম ট্রাইব্যুনালে গেছে এবং সেখানকার প্রায় সব বিচারক শ্রমিকদের পক্ষে রায় দিয়েছেন।
আইএলও অবশ্য এটিও স্বীকার করেছে, কাতার সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমিকদের কাজের এবং বসবাসের পরিবেশের উন্নতি করতে বেশ কিছু সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তবে শ্রম সংস্কার কার্যক্রম পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে আরো উদ্যোগ প্রয়োজন বলে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এমন এক সময়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো যখন জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেসার দোহায় দেশটির সরকারি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। ফেসারের এক বক্তব্য নিয়ে সম্প্রতি কাতারের সঙ্গে জার্মানির কূটনৈতিক টানাপড়েন শুরু হয়েছে।
ফেসার মঙ্গলবার জানিয়েছেন, এলজিবিটিকিউ ফুটবল সমর্থকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে এই প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে তিনি ২০ নভেম্বর কাতার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে উপস্থিত থাকতে রাজি হয়েছেন। গত সপ্তাহে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্তব্য করেন, কাতার বিশ্বকাপ আয়োজন করার বিষয়টি বার্লিনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বেশ ‘ট্রিকি’ ব্যাপার। এই বক্তব্যের পর কাতারে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রতিবাদ জানিয়েছিল দেশটির সরকার।
ফেসার এবং কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ খালেদ বিন খলিফা আল-থানির মধ্যকার বৈঠকেও বিষয়টি উঠেছিল বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। তবে বৈঠকে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যকে খারিজ করে দিয়েছে কাতার। উল্লেখ্য অধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে, কাতারে বিশ্বকাপ সম্পর্কিত বড় প্রকল্পগুলোতে ঠিক কতজন শ্রমিক মারা গেছেন তার সঠিক হিসাব জানাচ্ছে না দেশটি। অভিবাসী শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে ফিফার প্রতি একটি তহবিল গঠনেরও আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনগুলো।