খাদ্য মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে একটি। বেঁচে থাকতে আমরা সবাই খাবার খেয়ে থাকি। এরমধ্যে অনেকেই আছে খাদ্য বিলাসী যার সুস্বাদু খাবার খেতে পছন্দ করেন। তবে নিয়মের বাইরেও অনেক ব্যতিক্রম কিছু হয়ে থাকে। এ যেমন জীবনে সবচাইতে অদ্ভুত খাবারের কথা কি আপনাদের জানা আছে? তা না হলে হাঁসের ভ্রূণ থেকে দশ মাস পচানো ডিমসহ পৃথিবীর জঘন্যতম ১০ খাবারের তালিকা জেনে নিন।
ইয়াকের পুরুষাঙ্গ
এটা চাইনিজ একটা খাবার। তারা ইয়াকের পুরুষাঙ্গ কেটে নিয়ে তা খেয়ে থাকে, আর দাবি করে এটা নাকি ত্বকের জন্য উপকারি।
হ্যাগিস
স্কটল্যান্ডের খাবার এটি। গবাদি পশুর পাকস্থলীর মধ্যে হৃৎপিণ্ড, যকৃৎ ও ফুসফুস হলো হ্যাগিস। এই জিনিসটাকে তিন ঘণ্টা ধরে পানিতে ফুটানো হয় এবং তারপর লবণ ছিটিয়ে কোনোমতে খাবার যোগ্য করে পরিবেশন করা হয়।
ফুগু
পৃথিবীর মানুষ যত অদ্ভুত সব খাবার খায় তার মাঝে খুব ভয়ঙ্কর একটি হলো ফুগু বা পাফার ফিশ (পটকা মাছ)। টেট্রোডোটক্সিন নামের একটি বিষাক্ত পদার্থ দিয়ে ভর্তি এই মাছ ঠিকভাবে রান্না না হলে বিপদ, মানুষের মৃত্যু সহজেই ঘটিয়ে দিতে পারে এটি। বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে তবেই এই মাছ রান্নার অনুমতি পাওয়া যায়। অনেক শেফ আবার ইচ্ছে করেই অল্প একটু বিষ রেখে দেন এই মাছে যাতে খাবার সময় মুখে একটু সুড়সুড়ির মত অনুভূতি হয়।
রকি মাউন্টেইন অয়েস্টার
আমেরিকা ও কানাডার কিছু অঞ্চলে এই কুৎসিত খাবারটির উদ্ভব হয়। এর উপাদান হলো গরু, শুকর বা ভেড়ার অণ্ডকোষ। সঙ্গে দেওয়া হয় বেশ কড়া স্বাদ ও গন্ধের সস।
বালুট
আমরা খাই আস্ত মুরগীর মাংস অথবা মুরগীর ডিম। কিন্তু ভাবুন তো, এমন একটা ডিম, যার মাঝে মুরগীর বাচ্চা বেড়ে ওঠার পর্যায়ে আছে অথচ ঠিক মুরগীর মতো চেহারা পায়নি, সেটা কি কখনো খেতে পারবেন আপনি? মনে হবে একেবারে ভিনগ্রহের খাবার খাচ্ছেন! অথচ এটাই মানুষ খায় মজা করে। প্রথমে এর ভেতরে থাকা রস তারা খায় স্ট্র দিয়ে, এরপর ডিমটা ভেঙে ভেতরের মাংসটা খায়। কখনো ফিলিপাইনে গেলে এই খাবারটার ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন অবশ্যই! চিনেও এমন ডিম সিদ্ধ করে খাওয়া হয়, যার মাঝে থাকে হাঁসের ভ্রূণ। হাঁসের নাড়িভুঁড়ি পাখনা সহই চিবিয়ে খায় চীনারা খুব শখ করে।
সান্নাকাজি
কিছু খাবার কাঁচা খেতেই হয়, যেমন বিভিন্ন ফল, শাকসবজি। কিন্তু যে খাবারটা এখনো এমন কাঁচা যে তার টুকরোগুলো নড়াচড়া করে বেড়াচ্ছে প্লেট জুড়ে,সেটা খাবার রুচি আপনার হবে কী। সান্নাকাজি এমনই একটা খাবার। ছোট অক্টোপাস কেটে টুকরো করে সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশন করা হয়, ফলে সেগুলো তখনও কিঞ্চিত জীবিতই থাকে বলা যায়। এদের খেতেও হয় এমন অবস্থাতেই।
সেঞ্চুরি এগ
আরেকটি অদ্ভুত ধরণের ডিমের খাবর রয়েছে। এই ডিমটাকে সেঞ্চুরি এগ বলা হলেও এটা আসলে ১০ মাস পর্যন্ত পচানো হয়। এর পর এর থেকে আসতে থাকে বিশ্রী দুর্গন্ধ। এটাকেই কেটেকুটে মজা করে খায় চীনের মানুষ।
হাকার্ল
আইসল্যান্ড থেকে উদ্ভুত এই খাবারটার উপাদান হলো বাস্কিং শার্ক অর্থাৎ এক ধরনের হাঙ্গরের পচানো মাংস। একে পচানোর পরে টুকরো করে কেটে খাওয়া হয়। এর স্বাদ এবং গন্ধ দুটোই ভয়াবহ।
ভাজা মগজের স্যান্ডউইচ
আমরা গরুর মগজ খেয়ে থাকি বটে। যত্ন করে রান্না করে তা অনেক মজা করে খাই । কিন্তু এই খাবারের ক্ষেত্রে কম বয়সী গরুর মগজ স্লাইস করে কাটা হয়, তারপর একে ভেজে রুটির মাঝে দিয়ে পরিবেশন করা হয়। ব্যাপারটা পশ্চিমাদের কাছে বেশ ভয়াবহ, কারণ ম্যাড কাউ ডিজিজের ভয়ে তারা সচরাচর গরুর মহজ খাওয়ার চিন্তা করতে পারে না। এই খাবারটা আমেরিকার অনেক জায়গায় নিষিদ্ধ করে দেওয়া হলেও কিছু কিছু জায়গায় বেশ ঢাকঢোল পিটিয়েই পরিবেশন করা হয়।