পাবনা প্রতিনিধিঃ
পাবনার বেড়ার মৃদুলা স্পেশালাইজ্ড নামের একটি প্রাইভেট হাসপাতালের বিরুদ্ধে নানান অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগি এক ব্যক্তি ওষুধ প্রশাসন, সিভিল সার্জন ও ভোক্তা অধিদপ্তর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, মৃদুলা হসপিটালের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ জেমস্ রবার্ট গমেজ বেশ কিছু পরীক্ষা করে ওষুধ লেখেন এবং চেম্বার থেকে বলে দেয়া হয় এই ওষুধগুলো বাহিরে কোথাও পাবেন না। একমাত্র হাসপাতালের ফার্মেসিতেই পাওয়া যাবে। যা ভারতীয় ওষুধ কোন ওষুধের কাভারের উপর ভারতীয় মূল্য থাকে না। শুধু সাদা স্টিকার লাগানো বাংলাদেশি মূল্য দেওয়া থাকে। যেমন কেটনিক্স, জুলিকন, ফ্লাকজোল ওষুধ বেশি লেখেন। এতে প্রতিটি রোগির ওষুধের দাম নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। প্রকৃতপক্ষে ওই ডাক্তারের লেখা ওষুধ আর কোন ফার্মেসিতেই পাওয়া যায় না। এক একটা ওষুধের মূল্য চারশ’ থেকে ছয়শ’ টাকা। ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া একাধিক রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডাঃ জেমস্ রবার্ট গমেজ এর দেখা প্রতিটি রোগীর তিনটি করে একই ওষুধ লেখেন যা মৃদুলার নিজস্ব ফার্মেসি ছাড়া আর কোথাও পাওয়া যায় না। কারণ ছাড়াই যে কোন রোগীর একাধিক টেস্ট দিয়ে থাকেন যাতে সাধারণ রোগীদের জন্য অনেক টাকা খরচ করে টেস্ট করানো কষ্টকর হয়ে যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বেড়া পৌর এলাকার আলহেরা নগর এলাকার প্রবেশ পথে রয়েছে বিশাল আকারের গেট। সেখানে লেখা মৃদুলা স্পেশালাইজ্ড হাসপাতাল এন্ড ট্রমা সেন্টার। দুই পাশে টানানো আছে চটকদার রং বেরংয়ের সাইনবোর্ড। টানানো আছে প্রস্তাবিত মৃদুলা চক্ষু হাসপাতাল ও প্রস্তাবিত মৃদুলা নার্সিং কলেজ। এখানে একজন ডাক্তার এফ.সি.পি.এস ডিগ্রি অর্জন না করেও তার চিকিৎসা সনদে এই ডিগ্রি লিখে রোগীদের সাথে করছেন প্রতারণা।
ভুক্তভোগি নজরুল ইসলাম নামের এক রোগী জানান, “আমি এক বছর ধরে ডাঃ জেমস্ রবার্ট গমেজ এর কাছ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছি। প্রায় ৮০-৯০ হাজার টাকার ঔষুধ খেয়েছি। আমার রোগ এখনো ভালো হয়নি।” সে প্রেসক্রিপশনে অনেক দামী ঔষুধের নাম লেখে ।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানে কারণ ছাড়া কোন রোগীকে টেস্ট দেয়া হয় না। এবং কোন রকম দুর্নীতি হয় না। ডাঃ জেমস্ রবার্ট গমেজ এর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি।
অভিযুক্ত ডাঃ জেমস্ রবার্ট গমেজ জানান, আমি যেসকল ওষুধ লিখি তা বিএসটিআই অনুমোদিত এবং তাদেরই মূল্য নির্ধারণ করা। প্রতিটি রোগীকে একই ওষুধ লেখার বিষয়ে তিনি জানান, আমি ওমেগা-৩ ওষুধ একটু বেশি লিখি। কারণ, এটা ভিটামিন জাতীয় ওষুধ।
পাবনা সিভিল সার্জন ডাঃ মনিশর চৌধুরী জানান, বেড়ার মৃদুলা প্রাইভেট হাসপাতালের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সবুর আলী বলেন, এ বিষয়ে আমি এখনও কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। সত্যতা পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।