উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণের অর্থ ছাড় আরও কমেছে। পাশাপাশি নতুন প্রকল্পের জন্য ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও কমে গেছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে, অর্থাৎ জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে উন্নয়ন সহযোগীরা ৩৭৮ কোটি ৫ লাখ ডলার ছাড় করেছে, যা গত অর্থবছর একই সময়ের চেয়ে ৩৯ কোটি ডলার কম। গত অর্থবছরের ওই ছয় মাসে অর্থ ছাড়ের পরিমাণ ছিল ৪১৭ কোটি ডলার।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রতিবেদনে দেখা যায়, ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে মাত্র ১৭৬ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪৪০ কোটি ডলার। অর্থাৎ প্রতিশ্রুতি কম এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে প্রকল্প সহায়তা ও বাজেট সহায়তা বাবদ ১ হাজার ২৩৮ কোটি ডলার বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের।
ইআরডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ছয় মাসে সবচেয়ে বেশি অর্থ ছাড় করেছে জাপান সরকারের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা। ৯২ কোটি ১৬ লাখ ডলার দেওয়া হয়েছে সংস্থার পক্ষ থেকে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) দিয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৭ কোটি ডলার। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আইডিএর কাছ থেকে এসেছে ৫৪ কোটি ৩ লাখ ডলার। চীন থেকে এসেছে ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এদিকে গত ছয় মাসে ১০৫ কোটি ডলারের বিদেশি ঋণ পরিশোধ করেছে সরকার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১০৪ কোটি ৩ লাখ ডলার।
ডলারে পরিশোধের পরিমাণ মাত্র ১ কোটির একটু বেশি হলেও টাকার হিসাবে পরিমাণটি তুলনামূলক বেশি। ডলারের দাম বাড়ায় ১ হাজার ২৬১ কোটির বেশি টাকা খরচ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে এ খাতে খরচ হয়েছে ১০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা টাকার বেশি। গত বছর একই সময়ে যা ছিল ৮ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকার বেশি।
বৈদেশিক সহায়তা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈশ্বিক সংকটের কারণে ঋণ ও অনুদান কমেছে। এ ছাড়া কিছু সহায়তা রয়েছে প্রকল্পভিত্তিক। যেসব প্রকল্পের বিপরীতে বৈদেশিক সহায়তা আসার কথা, সেগুলোর বাস্তবায়নের গতি অনুযায়ী অর্থ ছাড় হয়।
ইআরডির প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ছয় মাসে মাত্র ৩ লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি এসেছে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান থেকে। গত অর্থবছরের একই সময়ে বিভিন্ন সংস্থা ও দেশের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি এসেছিল ৩৮ কোটি ডলারেরও বেশি। অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে ২৫ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১৭৪ কোটি ডলার। উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে বিদেশি ঋণের বিপরীতে ২ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হবে। গত বছর পরিশোধের পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার।