দেশের ব্যাংক খাতে সাংঘাতিক অপরাধ হচ্ছে এবং এই অপরাধ দেশকে পঙ্গু করে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি সংক্রান্ত মামলার চার আসামির জামিন শুনানির সময় মঙ্গলবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে এ মন্তব্য আসে।
শুনানির এক পর্যাায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘সবচেয়ে সাংঘাতিক অপরাধ হচ্ছে ব্যাংক খাতে। এই খাতে বড় বড় অপরাধ হচ্ছে।
এরা দেশটাকে পঙ্গু করে দিচ্ছে। এভাবে চললে দেশটা আগাবে কিভাবে?’
পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া ঋণ হিসাব খুলে ইসলামী ব্যাংকের চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ শাখা থেকে দুই লাখ ৩০ হাজার ঋণ নিয়ে সে টাকা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে―এ অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ ধারায় গত ২০ মার্চ মামলা করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরী। রাজশাহীর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন ইসলামী ব্যাংকের শিবগঞ্জ শাখার বরখাস্ত এসবিআইএসও মো. ফয়েজুর রহমান, সাবেক বিনিয়োগ ইনচার্জ মো. আবু বকর, ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো. মনিরুজ্জামান খান, ব্রাঞ্চের প্রধান মো. আফজাল হোসেন ও ব্যাংকটির কনিষ্ঠ কর্মকর্তা মনোয়ারা খাতুন ও নূর ইলেকট্রনিকসের স্বত্বাধিকারী মো. নূর আলম। এর মধ্যে সাবেক বিনিয়োগ ইনচার্জ মো. আবু বকর, ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো. মনিরুজ্জামান খান, ব্রাঞ্চের প্রধান মো. আফজাল হোসেন ও ব্যাংকটির কনিষ্ঠ কর্মকর্তা মনোয়ারা খাতুন আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
আদালতে এই চার আসামির জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. মাহবুব মোর্শেদ। দুকের পক্ষে ছিলেন ফৌজিয়া আক্তার পপি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
শুনানিতে বিচারক আসামিদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনাদের জেলে পাঠাতাম। কিন্তু টাকার পরিমাণ কম। তাই আপনাদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দেওয়া হলো। ’
এরপর আদালত আসামিদের চার সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন বলে সাংবাদিকদের জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মানিক।