২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ হতে জরুরি ভিত্তিতে আর্থিক খাত শক্তিশালী করা প্রয়োজন। এজন্য ব্যাংক খাতের সমন্বিত ও সার্বিক সংস্কার করতে হবে। খেলাপিঋণ কমানোর কৌশল থাকতে হবে এই সংস্কার প্রক্রিয়ায়। এছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান নজরদারিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জোর দিতে হবে।
গতকাল রবিবার এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। রাজধানীর একটি হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) আয়োজিত মধ্যাহ্ন ভোজসভায় বিশেষ বক্তা ছিলেন এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর। অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি টেকসই করতে চারটি খাতে সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন এডিমন গিন্টিং। এ খাতগুলো হলো জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, অবকাঠামোসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা নিশ্চিত করা, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও আর্থিক খাত সংস্কার।
এডিমন গিন্টিংয়ের মতে, বাংলাদেশের উন্নয়ন বেসরকারি খাতনির্ভর। এ দেশে মধ্যবিত্ত ভোক্তাশ্রেণি গড়ে উঠছে। তাই সরকারের নীতিতে এসবের প্রতিফলন থাকা উচিত, যাতে এ দেশের বেসরকারি খাত আরো বিকশিত হতে পারে। বেসরকারি খাত এ দেশের অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে। তবে সে জন্য দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যসংক্রান্ত আইনকানুন আরো সহজ করা উচিত। এসব কেন এত কঠিন থাকবে—এমন প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি।
এডিমন গিন্টিং আরো বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ ভুগছে। বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য বেড়েছে। এ দেশেও মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে, যার কারণে গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট বেড়েছে। বর্তমানে দেশে ডলার সংকট আছে, ব্যবসায়ীদের ঋণপত্র খুলতে সমস্যা হচ্ছে—এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে এডিমন গিন্টিং বলেন, মুদ্রা বিনিময় হার বাজার ব্যবস্থার ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। বাজারই সিদ্ধান্ত নেবে, দর কত হবে। বাজার উন্নয়নে সহযোগিতা চাইলে এডিবি তা দেবে।
অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। কোভিড, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এসব কারণে অর্থনীতি এখন কিছুটা খারাপ অবস্থায় আছে। আন্তর্জাতিক নিত্যপণ্যের বাজারও বেশ ওঠানামা করছে। তার চাপ আমাদের ওপর পড়ছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অ্যামচেমের সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, অ্যামচেমের সাবেক সভাপতি আফতাবুল ইসলাম, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।