কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপের শেষ ম্যাচে ব্রাজিলকে এক গোলে হারিয়েছে ক্যামেরুন। শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১ টায় লুসাইল স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে এই দু’দল। একাধিক আক্রমণ করলেও গোল করতে ব্যর্থ হয় ব্রাজিল। শেষ পর্যন্ত গোল না হলে গোলশূন্য থেকেই বিরতিতে যায় ব্রাজিল ও ক্যামেরুন। গোলের আশায় মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে দু’দল। তবে ম্যাচের অতিরিক্ত মিনিটে ভিনসেন্ট আবুবকর গোল করে ডেড লক ভাঙ্গেন। তার করা একমাত্র গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ক্যামেরুন। হেরে গেলেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই নক আউট পর্বে যায় ব্রাজিল।
ম্যাচের শুরুতেই আক্রমণে যায় ব্রাজিল। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে বাম দিক থেকে বল নিয়ে আক্রমণে উঠে অ্যান্টোনি। ডি বক্সে ঢুকে বল বাড়ালেও সেখান থেকে কেউ জোড়ালো শট নিতে না পারায় কোন বিপদ ঘটাতে পারেনি তারা। ম্যাচের ৬ মিনিটে অ্যান্টোনিকে ফাউল করার কারণে নুউহো টোলোকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। এরপর ফাউল করার কারণে ম্যাচের ৭ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন ব্রাজিলের ডিফেন্ডার এডার মিলিটাও।
ম্যাচের ১১ মিনিটে বাম দিক থেকে আবারও আক্রমণে উঠে ব্রাজিল। তবে অ্যান্টোনির বাড়ানো বল ধরতে ব্যর্থ হয় জেসুস। ম্যাচের ১৪ মিনিটে বাম দিক থেকে ক্রস করেন জেসুস। লাফিয়ে উঠে হেড করেন মার্টিনেলি। তবে তা অসাধারণ সেভে দলকে রক্ষা করেন ক্যামেরুনের গোলরক্ষক ডেভিস এপাসি। ম্যাচের ১৬ মিনিটে কর্নার পায় ব্রাজিল। তবে সেই কর্নার থেকে সুবিধা করতে পারেনি তারা।
ম্যাচের ২০ মিনিটে চৌপো-মোটিং একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে গেলেও তা আটকে যায় ব্রাজিল ডিফেন্সে। ম্যাচের ২২ মিনিটে ডান দিক থেকে ক্রস করেন ফ্যাবিনহো। সেখান থেকে বল পেয়ে শট করেন ফ্রেড। তবে তা ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। ম্যাচের ২৪ মিনিটে বাম দিক থেকে অ্যান্টোনির বাড়ানো বল কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন কলিন্স ফাই।
ম্যাচের ব২৮ মিনিটে আক্রমণে যায় ব্রাজিল। মাঝমাঠ থেকে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে যায় রদ্রিগো। তবে ডি বক্সের বাইরে ফাউলের শিকার হয় রদ্রিগো। সেখান থেকে ফ্রি কিক পায় ব্রাজিল। তবে রদ্রিগোর নেওয়া সেই ফ্রি কিক মানব দেওয়ালে লেগে প্রতিহত হয়। ম্যাচের ৩১ মিনিটে আবারও একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে গেলে আবারও ফাউলের শিকার হয় রদ্রিগো। কালিন্স ফাইকে হলুদ কার্ড দেখান রাফারি। ফের ফ্রি কিক পায় ব্রাজিল। দানি আলভেজের নেওয়া সেই ফ্রি কিক চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।
ম্যাচের ৩৭ মিনিটে সাজানো আক্রমণ থেকে বল পেয়ে গোলমুখে শট করেন অ্যান্টোনি। তবে তা রুখে দেন ডেভিস এপাসি। ম্যাচের ৪১ মিনিটে আক্রমণে যায় ক্যামেরুন। তবে তা রুখে দেন ডিফেন্ডার ব্রেমার। এরপর আরও বেশকিছু আক্রমণ চালায় ব্রাজিল। তবে শেষ পর্যন্ত কোন গোল না হলে গোলশূন্য ন্সমতায় থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে দু’দল।
বিরতি থেকে ফিরেই প্রথম আক্রমণে যায় ক্যানেরুন। ম্যাচের ৪৭ মিনিটে কর্নার পায় তারা। তবে তা থেকে বিপদ ঘটাতে পারেনি ক্যামেরুন। ম্যাচের ৫১ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর থেকে শট করেন ভিনসেন্ট আবুবকর। তবে তা চলে যায় পোস্টের সামান্য বাইর দিয়ে। ম্যাচের ৫৩ মিনিটে সহজ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি ব্রাজিল। ডি বক্সের ভেতরে জটলার ভেতর থেকে শট করতে ব্যর্থ হয় জেসুস। ফলে গোল করতে ব্যর্থ হয় ব্রাজিল।
ম্যাচের ৫৬ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বল পেয়ে শট করে মার্টিনেলি। তবে তা অসাধারণ সেভে দলকে রক্ষা করেন ডেভিস এপাসি। কর্নার থেকে বল পেয়ে শট করেন মিলিতাও। তবে তা আবারও রক্ষা করেন ডেভিস এপাসি। ম্যাচের ৫৮ মিনিটে অ্যান্টোনির নেওয়া শটে আবারও অসাধারণ সেভ করেন ডেভিস এপাসি। এই পর্যন্ত ম্যাচে মোট ৬ টি সেভ করেন ক্যামেরুনের এই গোলরক্ষক।
ম্যাচের ৬৭ মিনিটে ব্রাজিল আক্রমণে গেলেও তা অসাধারণ ট্যাকেলে ক্লিয়ার করে দেন এঞ্জো এবোসি। ম্যাচের ৭১ মিনিটে আবারও অ্যাটাকে গেলেও ফিনিশিংয়ের অভাবে গোলের দেখা পায় না ব্রাজিল। ম্যাচের ৭৮ মিনিটে ডি বক্সের বাইর থেকে শট করেন ক্যামেরুনের অলিভিয়ার এনটিচ্যাম। তবে তা রুখে দেন ব্রাজিলের গোলরক্ষক এডারসন।
ম্যাচের ৮০ মিনিটে কর্নার পায় ক্যামেরুন। তবে তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ম্যাচের ৮১ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বল নিয়ে ছুটে যায় মার্টিনেলি। তবে তাকে ফাউল করে ভিনসেন্ট আবুবকর। রেফারি তাকে হলুদ কার্ড দেখান। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে ডান দিক থেকে ক্রস করেন বদলি নামা রাফিনহা। তবে সেখান থেকে বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হয় পেড্র।
এরপরও বেশ কিছু আক্রমণ করে ব্রাজিল। তবে ডেড লক ভাঙ্গতে ব্যর্থ হয় তারা। ম্যাচের অতিরিক্ত মিনিটে গোলের দেখা পায় ক্যামেরুন। দূর থেকে বাড়ানো বলে হেড করে বল জালে জড়ান ভিনসেন্ট আবুবকর। তার গোলে ম্যাচে প্রথম লিড পায় ক্যামেরুন। পিছিয়ে পড়ে গোলের লক্ষ্যে বেশ কিছু আক্রমণ করে ব্রাজিল। তবে গোল করতে ব্যর্থ হয় তার। শেষ পর্যন্ত ক্যামেরুনের কাছে এক ১-০ গোলে হেরে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল। তবে হেরেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল।