সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে এক পা দিয়েই রেখেছিল ভারত। শক্তিশালী ভারত ফাইনালে যাবে তা নিয়ে খুব শঙ্কাও ছিল না। তবে একটুখানি বাধা ছিল নেপাল। আর সেই নেপালেই আটকে গেল ভারতের মেয়েরা। গতকাল কমলাপুর স্টেডিয়ামে নেপাল ৩-১ গোলে হারিয়েছে ভারতকে।
এ ম্যাচে অসাধারণ ফুটবল খেলেছে নেপাল। ভারতকে দর্পচূর্ণ করেছে নেপাল। তারাও আশঙ্কা করেনি এভাবে হেরে যাবে নেপালের কাছে। নেপাল তো একপ্রকার প্রস্তুতি নিয়েই রেখেছিল তারা বিদায় নেবে। মরণ কামড় দিয়ে ভারতকে হারিয়ে দিল।
নেপালের নারী ফুটবলাররা ম্যাচ শেষে ফাইনালে ওঠার আনন্দ করলেন। মাঠে দেশের পতাকা নিয়ে দৌড়ালেন। কারো কারো চোখে আনন্দ অশ্রু। গ্যালারিতে জার্সি ছুড়ে মারলেন। অন্যপ্রান্তের গ্যালারির কাছে গিয়ে দর্শকদের অভিনন্দনের জবাব দিলেন। একজন আরেক জনকে জড়িয়ে ধরে কান্না করলেন। ভারতকে হারানো কঠিন এক কাজ। কারণ গতকালও নেপালের বিপক্ষে ভারতের আট খেলোয়াড় খেলেছেন, যাদের কিনা অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফিফা বিশ্বকাপে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
এদিকে মহামূল্যবান এক জয়ের পরও নেপাল পুরোপুরি খুশি না। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে নেপালের কোচ প্রাসাদ গুরুং এসে জানালেন, তিনি খুশি হতে পারেননি। তার দল নাকি ১০০ ভাগ পারফরম্যান্স করতে পারেননি। মাত্র ৬০ ভাগ পারফরম্যান্স করেছেন নেপালের আমিশা, দিপা, কুমারী, প্রীতি, মনমায়ারা, মমতা, তুলাসা, প্রতীক্ষা চৌধুরী, অঞ্জলীরা।
নেপালের কোচ প্রাসাদ গুরুং আগের দুই ম্যাচ শেষে অভিযোগ করেছিলেন নেপালে তারা সেলাই বলে খেলেছেন। এখানে সেই বলে খেলা যাচ্ছে না। ঢাকায় সাফে যে বলে খেলা হচ্ছে সেটা দিয়ে খেলতে পারছি না। এছাড়া তার অভিযোগ ছিল কমলাপুরের টার্ফ ভালো না। আহত হচ্ছেন খেলোয়াড়রা।
এত সমস্যার মধ্যে ভারতের মতো দলকে কীভাবে হারাল? খারাপ টার্ফে কীভাবে কঠিন ম্যাচ জিতল নেপাল। প্রশ্নটা শুনে জবাব দিলেন কোচ, ‘আমি এখনো বলব, যে বল দিয়ে খেলা হচ্ছে সেটি দিয়ে আমরা খেলে অভ্যস্ত নই। এখনো বলব টার্ফ ভালো না।’ তাহলে নেপাল ভালো খেলে জিতল কীভাবে ? নেপালের কোচ বললেন, ‘এখন আমরা মানিয়ে নিচ্ছি। ফাইনালে আরো বেশি মানিয়ে নিতে পারব।’
এ ম্যাচে ভারত ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল নেপালের বিপক্ষে। অপুর্ণা নারজারির গোলে ২১ মিনিটে এগিয়ে যায় ভারত, তবে তা ধরে রাখতে পারেনি। বিরতির পর ভারতের লক্ষ্য ছিল শক্তি ব্যয় করার দরকার নেই। খেলাটার গতি কমিয়ে যতটা পারা যায় ম্যাচটা শেষ করা। ভারতের এই মানসিকতা সর্বনাশ করে দিয়েছে। বিরতির পর শুরুতে প্রথম দুই মিনিটেই নেপাল ভারতের জালে বল জড়িয়ে দেয়। গোলের মালিক অঞ্জলী চান্দ ১-১। ৯ মিনিটের মধ্যে আবারও নেপাল গোল করে। ভারতের গোলকিপার আনশিকা আর রক্ষণভাগের ভুলে নেপাল সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেনি। পেনালটি পায় নেপাল। গোল করেন অধিনায়ক প্রীতি রায় ২-১। ভারত তখন চোখে অন্ধকার দেখছে। আক্রমণে যাওয়া তো দূরের কথা, নেপালের চাপ সামাল দিতে গিয়ে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। ৮৯ মিনিটে আমিশা খড়কি গোল করেন ৩-১।
ভারতের কোচ ময়মল রকি খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে আফসোস করে বললেন, ‘ছোটখাটো ভুলের জন্য ম্যাচটা হেরেছি।