এশিয়া কাপ
চলমান এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সুপার ফোর নিশ্চিতের লক্ষ্যে বুধবার তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ হংকংয়ের মুখোমুখি হচ্ছে শক্তিশালী ভারত।
চিরপ্রতিন্দ্বন্দী পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপে দারুণ শুরু করে ভারত। এবার ‘এ’ গ্রুপের নিজেদের শেষ ম্যাচে কাল হংকংয়ের মুখোমুখি হবে টিম ইন্ডিয়া। এ ম্যাচ জিতলেই সুপার ফোরের টিকিট পাবে ভারত।
এদিকে, এদিনই গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে বাছাই পর্ব পেরিয়ে আসা হংকং। ভারতকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দেয়ার লক্ষ্য পুঁচকে হংকংয়ের।
দুবাই ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে ভারত-হংকংয়ের ম্যাচটি।
এবারের এশিয়া কাপের সবচেয়ে হাইভোল্টেজ ম্যাচ ছিল ভারত-পাকিস্তানের। ঐ ম্যাচে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। ব্যাট-বল হাতে অলরাউন্ড পারফরমেন্স ছিল ভারতের হার্দিক পান্ডিয়ার।
বল হাতে ৪ ওভারে ২৫ রানে ৩ উইকেট নেয়ার পর, ব্যাট হাতে শেষদিকে ১৭ বলে ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ভারতের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া পান্ডিয়া।
ম্যাচে ৪ ওভার বল করে ২৬ রানে ৪ উইকেট নেন ভুবনেশ্বর। পান্ডিয়া-ভুবেনশ্বরের বোলিং তোপে ১৪৭ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান।
জবাবে ১৪৮ রানের টার্গেট ২ বল বাকী রেখেই স্পর্শ করে ভারত। পঞ্চম উইকেটে ২৯ বলে ৫২ রান তুলে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন রবীন্দ্র জাদেজা ও পান্ডিয়া। জাদেজা ৩৫ রানে আউট হলেও ভারতের জয় নিশ্চিত করেন পান্ডিয়া। ৩৫ রানের ইনিংস খেলেছেন অফ ফর্মে থাকা বিরাট কোহলি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়ে আত্মবিশ্বসের তুঙ্গে রয়েছে ভারত। তাই হংকংয়ের বিপক্ষেও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি তারা। তবে হংকংয়ের বিপক্ষে খেলার কোন অভিজ্ঞতা না থাকায় বেশ সাবধান ভারত।
দলের স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল বলেন, ‘আমরা জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। হংকং দলটিকে নিয়ে আমাদের ধারনা খুবই কম। এই ফরম্যাটে আগে কখনও খেলা হয়নি। তবে আমরা সেরাটা খেলতে পারলে, জয় অসম্ভব নয়।’
হংকংয়ের সাথে টি-টোয়েন্টিকে কখনও খেলেনি ভারত। তবে দু’বার ওয়ানডেতে দেখা হয়েছে দু’দলের। দু’বারই জয় পায় ভারত। দু’বারই এশিয়া কাপের মঞ্চে। ২০০৮ সালে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের চতুর্থ ম্যাচে হংকংকে ২৫৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারায় ভারত। রান বিবেচনায় যা ছিল ভারতের ওয়ানডে ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বড় ব্যবধানের জয়। প্রথমে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ৩৭৪ রান করেছিলো ভারত। জবাবে ১১৮ রানে গুটিয়ে যায় হংকং।
২০১৮ সালের এশিয়া কাপেও দেখা হয় ভারত-হংকংয়ের। ঐ ম্যাচে মাত্র ২৬ রানে হারে হংকং। ভারতের ৭ উইকেটে ২৮৫ রানের জবাবে ৮ উইকেটে ২৫৯ রান করেছিল হংকং।
টি-টোয়েন্টিতে ২০১৪ সালে অভিষেক হয় হংকংয়ের। এখন পর্যন্ত ৫২টি ম্যাচ খেলে ২১টিতে জয় ও ৩১টিতে হেরেছে তারা। টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোর মধ্যে আফগানিস্তান-আয়ারল্যান্ডকে দু’বার করে, বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়েকে একবার করে হারিয়েছে হংকং।
টি-টোয়েন্টিতে হংকংয়ের সর্বোচ্চ দলীয় রান ৮ উইকেটে ১৮৬। আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের ম্যাচে গত জুলাইয়ে বুলাওয়েতে পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে ঐ স্কোর করেছিলো তারা। হংকংয়ের সর্বনিম্ন রান ৬৯।
২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে চট্টগ্রামে নেপালের বিপক্ষে সর্বনিম্ন রানের লজ্জা পেয়েছিলো হংকং।
এবার এশিয়া কাপের বাছাই পর্বের সেরা দল হয়েই মূল পর্বে জায়গা করে নেয় হংকং। বাছাই পর্বে সিঙ্গাপুরকে ৮ রানে, কুয়েতকে ৮ উইকেটে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ৮ উইকেটে হারায় হংকং।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচকে নিয়ে হংকংয়ের অধিনায়ক নিজাকাত খান বলেন, ভারত বিশ্বসেরা দল। তাদের বিপক্ষে খেলার জন্য দলের সবাই মুখিয়ে আছে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে ভালো খেলা ও বিশ্বকে চমকে দেয়া। এটি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট, তাই আমরা জয়ের স্বপ্ন দেখছি।
ভারত দল: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), লোকেশ রাহুল, বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদব, ঋষভ পান্ত (উইকেটরক্ষক), দিনেশ কার্তিক, হার্দিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ভুবনেশ্বর কুমার, অর্শদিপ সিং, রবি বিষ্ণই, আবেশ খান, দীপক হুদা ও যুজবেন্দ্রা চাহাল।
হংকং দল: নিজাকাত খান (অধিনায়ক), স্কট ম্যাককেইন (উইকেটরক্ষক), ইয়াসিন মর্তুজা, বাবর হায়াত, কিঞ্চিত শাহ, আইজাজ খান, এহসান খান, আইয়ুশ শুকলা, জিশান আলী, মোহাম্মদ গাজানফার, হারুন আরশাদ।