চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দিয়ে নিজ দেশে পণ্য পরিবহনে বাণিজ্যিক অনুমতি পেল ভারত। এ বিষয়ে সম্প্রতি স্থায়ী ট্রানজিট আদেশ জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এর ফলে এখন থেকে বন্দর দুটো ব্যবহার করে নিজ দেশে পণ্য পরিবহন করতে পারবে ভারত। ২০১৮ সালে ভারতে এসিএমপি চুক্তি স্বাক্ষর করে ঢাকা ও দিল্লি। যার আওতায় ভারতকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে নিজ দেশে পণ্য পরিবহনের অনুমতি দেয় বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে একটি আদর্শ কার্যপ্রণালি তৈরি হলে পরের বছর পরীক্ষামূলকভাবে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে একটি ভারতীয় পণ্যের চালান আগরতলা যায় আখাউড়া হয়ে। গত বছর মোংলা বন্দর দিয়ে আরও দুটি রুটে পরীক্ষামূলক ট্রানজিট নেয় দেশটি। এতদিন পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনে অনেক সময় লাগত ভারতের। এখন বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পরিবহন করলে সময় ও খরচ দুটোই কমে আসবে।
চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্যের ট্রানজিট সুবিধা দিতে মোট ১৬টি রুট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এনবিআরের আদেশে বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ‘এগ্রিমেন্ট অন দি ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস টু অ্যান্ড ফ্রম ইন্ডিয়া’র আওতায় উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্ট পণ্যের কাস্টমস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবে। ফলে ভারত বন্দর দুটি ব্যবহার করে নিজ দেশে পণ্য পরিবহন করতে পারবে। এ দুটি বন্দর ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনের জন্য ১৬টি ট্রানজিট রুট থাকবে। এগুলো হচ্ছে—চট্টগ্রাম বন্দর-আখাউড়া-আগরতলা, মোংলা বন্দর-আখাউড়া-আগরতলা, চট্টগ্রাম বন্দর-তামাবিল-ডাউকি, মোংলা বন্দর-তামাবিল-ডাউকি, চট্টগ্রাম বন্দর-শেওলা-সুতারকান্দি, মোংলা বন্দর-শেওলা-সুতারকান্দি, চট্টগ্রাম বন্দর-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর, মোংলা বন্দর-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর, আগরতলা-আখাউড়া-চট্টগ্রাম বন্দর, আগরতলা-আখাউড়া-মোংলা বন্দর, ডাউকি-তামাবিল-চট্টগ্রাম বন্দর, ডাউকি-তামাবিল-মোংলা বন্দর, শেওলা-সুতারকান্দি-চট্টগ্রাম বন্দর, শেওলা-সুতারকান্দি-মোংলা বন্দর, শ্রীমন্তপুর-বিবিরবাজার-চট্টগ্রাম বন্দর এবং শ্রীমন্তপুর-বিবিরবাজার-মোংলা বন্দর।
এতে বলা হয়, বন্দরে পণ্য পৌঁছার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ কাস্টমসকে জানাতে হবে। বিল অব এন্ট্রি, কমার্শিয়াল ইনভয়েস, প্যাকিং লিস্টসহ সম্পূর্ণ ডকুমেন্টেশন কাস্টমসের কাছে জমা দিতে হবে এবং ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে কাস্টমস ডিউটি পরিশোধ করতে হবে। ফি এবং চার্জের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। আদেশে বলা হয়েছে, প্রতি চালান ডকুমেন্ট প্রসেসিংয়ের জন্য ৩০ টাকা, ট্রান্সশিপমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি টন পণ্যের জন্য ২০ টাকা, টনপ্রতি সিকিউরিটি চার্জ ১০০ টাকা, প্রতি কনটেইনার এসকর্ট চার্জ (কিলোমিটার প্রতি) ৮৫ টাকা, টনপ্রতি অন্যান্য প্রশাসনিক চার্জ ১০০ টাকা এবং প্রতি কনটেইনার সড়্যানিং চার্জ বাবদ ২৫৪ টাকা পরিশোধ করতে হবে। এর বাইরে সড়ক ব্যবহারের নির্ধরিত টোল দিতে হবে। এ ছাড়া ইলেকট্রিক লক এবং সিলের জন্যও নিয়ম অনুযায়ী চার্জ দিতে হবে। বিভিন্ন ফি এর ওপরে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য হবে।