প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে মিগযাউম, আঘাত হানতে শুরু করছে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে। এর ফলে চেন্নাইয়ে তুমুল বৃষ্টি হয়েছে এবং অন্তত আটজন মারা গেছে। ভারতীয় গণমাধ্যম এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তামিলনাড়ুতে তুমুল বৃষ্টির মাধ্যমে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে অন্ধ্রপ্রদেশ অতিক্রম করতে শুরু করে মিগযাউম। এ সময় এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। তবে রাজ্যটি অতিক্রমের সময় কোথাও কোথাও বাতাসের গতিবেগ ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত ছিল।
চেন্নাই পুলিশের বরাত দিয়ে বলেছে, চেন্নাই শহরের বেসান্ত নগর এলাকায় ঝড়ে গাছ উপড়ে গিয়ে বিদ্যুতের ছিন্ন করেছে এবং এ সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজন মারা গেছে। অন্যদিকে নগরীর ইস্ট কোস্টাল রোডের কানাথুর এলাকায় একটি নির্মাণাধীন দেওয়াল ধসে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।এর প্রভাবে তামিলনাড়ুর চেন্নাইসহ একাধিক জায়গায় একটানা বৃষ্টি হচ্ছে।
এমনকি, প্লাবিত চেন্নাই বিমানবন্দরের রানওয়ে। ফলে বাতিল করা হয়েছে একাধিক ফ্লাইট। অন্তত ২০টি ফ্লাইটের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। রাজ্য সরকার চেন্নাই, চেঙ্গলপাট্টু, কাঞ্চিপুরম এবং তিরুভাল্লুর জেলায় সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সব স্কুল-কলেজ। অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতার পাশাপাশি বিদ্যুৎ সংযোগ ও ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হচ্ছে। বাতিল করা হয়েছে দূরপাল্লার ট্রেন। তবে, উপকূলীয় এলাকায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল মোতায়েন করা হয়েছে।
তিরুপতি, নেল্লোরে, প্রকাসম, বাপালা, কৃষ্ণা, পশ্চিম গোদাভরী, কোনা সীমা এবং কাকিনাদা- এ আট জেলায় বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে রাজ্য সরকার।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগন মোহন রেড্ডি প্রাণহানি এবং সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে কর্মকর্তাদের এই ঘূর্ণিঝড়কে বৃহৎ চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় দুর্গত প্রতিটি জেলায় বিশেষ কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দুই কোটি রুপি তহবিলও ছাড়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, উপকূলীয় এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এজন্য রাজ্যজুড়ে দুই শতাধিক ত্রাণ শিবির স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে উদ্ধার করে নিয়ে আসা লোকজনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, মিগযাউমের কারণে অন্ধ্রপ্রদেশর উপকূলবর্তী নগর ও শহরে ভারী বৃষ্টি কাল পর্যন্ত বহাল থাকবে। এমনকি কোথাও কোথাও অতিভারী (৩০-৪০ সেন্টিমিটার) বর্ষণও হতে পারে।