ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের বলেশ্বরে কলকাতার শালিমার স্ট্শেন খেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী ছিলেন বাংলাদেশে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার চাঁদরতনপুর গ্রামের কলেজ শিক্ষক মো. আকতারুজ্জান ও তার স্ত্রী নুরজামান বেগম।
জানা গেছে, তারা ভেলরে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিলেন। আকতারুজ্জামান মোবাইল ফোনে বলেন, ১ জুন তারা বাড়ি থেকে রওনা দেন। আর শুক্রবার বিকাল ৩টা ২০ মিনিটে শালিমার স্টেশন থেকে তাদের করমণ্ডল এক্সপ্রেসে যাত্রা শুরু হয়। তাদের গন্তব্য ছিল তামিলনাড়ুর রাজ্যের ভেলরে। দ্রুতগতির ট্রেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বলেশ্বরের বাহাঙ্গাবাজার এলাকায় পৌঁছালে বিকট শব্দ ও ঝাঁকুনি অনুভব করেন। চারিদিকে মানুষের আর্তচিৎকার। তারাও আতংকিত হয়ে পড়েন। তারা পিছনের দিকে এসি কামরায় ভ্রমণ করছিলেন। এরপর ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। সামনের দিকে এগুতে গেলে স্থানীয়রা বাঁধা দেয়। ততক্ষণে বুঝতে পারেন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আখতারুজ্জামান জানান, এর মধ্যে উদ্ধার কর্মীরা এসে গেছেন। অ্যাম্বুলেন্স আসা যাওয়ার সাইরেনের শব্দ। কি করবেন বুঝতে পারছেন না। তখন তাদের পাশে সরিয়ে নেওয়া হয়। রাত ১টার দিকে বাসে তুলে ১৮০ কিলোমিটার দূরে ভুবনেশ্বর স্টেশনে পৌঁছে দেওয়া হয়। এরপর তাদের শনিবার চেন্নাইগামী বনশ্রী এক্সপ্রেস টেনে তুলে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, ঐ ট্রেনে আরও দুই বাংলাদেশি দম্পতি আছে। তাদের একজনের বাড়ি যশোরে ও অপর জনের ঢাকায়। তারাও ভেলরে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন। ট্রেনে আরও বাংলাদেশি যাত্রী ভেলরে চিকিৎসার যাচ্ছিল বলে জানান তিনি। রাত ৮টার সময় বলেন, এখনো ট্রেনে আছেন। রোববার সকালে চেন্নাই পৌঁছাবেন। দুর্ঘটনার যে ভয়াবহ দৃশ্য দেখেছেন তা বাকি জীবনে কখনো ভুলবেন না তিনি।
আক্তারুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর তারা অন্ধকারের মধ্যে ছিলেন। কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। বাসে ওঠা পর্যন্ত সময়টুকু তাদের আতঙ্কে কেটেছে।
আক্তারুজ্জামানের স্ত্রী নূরজাহান বলেন, তারা যে কামরায় ছিলেন সেখানে দুজন বাংলাদেশি ছিল। তবে অন্য কামরাগুলোয় আরও অনেক বাংলাদেশি ছিল। পরের ট্রেনে তাদের তুলে দেওয়ার পর বুঝতে পেরেছেনঅনেক বাংলাদেশি দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনে ছিল।
এদিকে এ ঘটনার ভয়াবহতা তুলে ধরে ঢাকার মিরপুরে বসবাসকারী ব্যবসায়ী সাজ্জাদ ভারতের একটি দৈনিককে জানান, অনেক মানুষকে চোখের সামনে মরে যেতে দেখেছি। সে কী সাংঘাতিক দৃশ্য!’ আমার স্ত্রীর মেরুদণ্ডে একটু চোট লেগেছে, আমার লেগেছে হাতে। কিন্তু যা দেখলাম, তার সঙ্গে আমাদের আঘাত একেবারেই তুলনা করার মতো কিছু নয়।