কাজী নওশাবা আহমেদ মঞ্চে অভিনয় বলতে যা বোঝায় তা কখনো করেননি। সম্প্রতি তিনি প্রথমবার কোনো মঞ্চ নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করলেন। প্রখ্যাত লেখক ও নাট্যকার দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীল দর্পণ’ নাটক অবলম্বনে কমলা কালেক্টিভ মঞ্চস্থ করেছে ‘নীল ছায়া’। এ নাটকে দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেছেন নওশাবা। সে অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘আমি সৈয়দ জামিল আহমেদ স্যারের কর্মশালা করেছি। অনেক আগে একটি নাটকের ছোট একটি চরিত্রে মঞ্চে অভিনয় করেছি। কেন্দ্রীয় চরিত্রে এবারই প্রথম অভিনয় করলাম। মাত্র ১৯ দিন সময় পেয়েছিলাম প্রস্তুতির জন্য। এ সময়ের মধ্যে ২ ঘণ্টার নাটকের জন্য প্রস্তুত হওয়া সহজ নয়। তাও আবার দ্বৈত চরিত্র। আমার মঞ্চে ওঠার সাহস হয়নি। নাটকটির প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার লিসা গাজী, নির্দেশক নায়লা আজাদ নূপুর এবং রিপনের উত্সাহে মঞ্চে দাঁড়িয়ে গেলাম।’
দম নিয়ে নওশাবা বলে চলেন, ‘আমি রূপা ও ক্ষেত্রমণি চরিত্রে অভিনয় করেছি। দুই সময়ের দুই চরিত্র। এক চরিত্র থেকে অন্য চরিত্রে শিফট করা চ্যালেঞ্জিং ছিল। খুব ভালো বা খুব খারাপ বলব না; তবে আমি চেষ্টা করেছি। তাত্ক্ষণিক দর্শকের প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। অনেকদিন পর প্রাণ খুলে অভিনয় করলাম। আসলে আমার অভিনয়ের ক্ষুধা অনেক। আমি কাস্টিংয়ের দৌড়ে পিছিয়ে। যে কাজগুলো করেছি, খেয়াল করলে দেখবেন অভিনয়ের সুযোগ মিলেনি খুব একটা। কষ্ট নিয়ে এতগুলো বছর বসে ছিলাম। এ নাটক করতে গিয়ে অভিনয় দেখানোর সুযোগ মিলেছে। ওটিটি, সিনেমা ও টেলিভিশনে যখন অভিনয়ের সুযোগ মিলছিল না; তখন মনে হলো মূলে ফিরে যাই। ‘নীল ছায়া’ করতে গিয়ে ২ ঘণ্টা জান প্রাণ দিয়ে অভিনয় করেছি।’ মঞ্চের মতো টেলিভিশনে আলো ছড়াচ্ছেন নওশাবা। টেলিভিশনের অনিয়মিত এ অভিনেত্রী সময়ের আলোচিত সিরিজ ‘পুনর্জন্ম’-তে অভিনয় করেছেন। ভিকি জাহেদ পরিচালিত এ সিরিজে অভিনয় প্রসঙ্গে নওশাবা বলেন, ‘ভিকি আমাকে যে চরিত্র দিয়েছে তাতে অভিনয়ের সুযোগ আছে। কাজটি যখন শুরু করি তখন বুঝিনি এ পর্যায়ে আসবে। আসলে শিল্পীদের প্রাপ্য চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দেওয়া দরকার।’
নওশাবা দীর্ঘশ্বাস ফেলে যোগ করেন, ‘ভিউ বাড়ানোর দায়িত্ব আমার নয়। আমার কাছে সোশ্যাল মিডিয়া ডায়েরির মতো। আমি এখানে নিজের কথা, মেয়ের কথা টুকে রাখি। সেগুলো নিজের কাজ প্রচারের জন্য দেওয়া হয় না। কাজের চেয়ে এসব যখন বিবেচনায় নেওয়া হয় তখন তো মুশকিল। আমি অভিনয়ের সুযোগ নেই বলে অনেক কাজ না করে দিয়েছি। আমার মতো অভিনয় শিল্পীদের মনের মতো একটি চরিত্রের জন্য চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকতে হচ্ছে।’অভিনেত্রী নওশাবা অপেক্ষায় আছেন পছন্দের চরিত্রের। যেখানে তিনি মনের মতো অভিনয় করতে পারবেন।