বিস্ময়কর বলতেই হবে! অদ্ভুত এক শহর নির্মাণ করতে যাচ্ছে সৌদি আরব। আকাশ থেকে শহরটি দেখতে মনে হবে রেললাইনের মতো। মরুভূমি, পাহাড় পার হয়ে উপকূলে পৌঁছে যাওয়া সমান্তরাল দুটি সুউচ্চ ভবনের এক লম্বাটে শহর। এ ভবন দুটিতে থাকবে শহরের সব সুবিধাই। এটিকে বলা হচ্ছে ‘মিরর লাইন’। কাচ দিয়ে মোড়া বলেই এমন নামকরণ হয়তো। সৌদির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ তাবুকের উপকূলীয় নিওম এলাকায় নির্মিত হবে এই ‘মিরর লাইন’।
এর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ কোটি ডলার। আকাশচুম্বী দুটি ভবন সমান্তরালভাবে চলে যাবে ১২০ কিলোমিটার। উচ্চতা হবে ১ হাজার ৬০০ ফুট। একই সঙ্গে উঁচু ও দীর্ঘ একটি বিচিত্র কাঠামো পাবে শহরটি।
নিউইয়র্কের এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের চেয়ে উঁচু এ শহরে কী না থাকবে! লম্বাটে হওয়ায় এর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দ্রুত পৌঁছাতে ভবনের নিচে থাকবে উচ্চ গতির ট্রেন। চোখের পলকে এ ট্রেন এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে যাবে। এতে সময় লাগবে মাত্র ২০ মিনিট। ভবনের নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে জলধারা। সেখানে ব্যবস্থা থাকবে নৌকার। থাকবে খেলার মাঠও। এ মাঠের অবস্থান হবে ভূপৃষ্ঠ থেকে এক হাজার ফুট ওপরে। এ ছাড়া হেঁটেও এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যাওয়া যাবে। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রত্যাশা, নিওম ও মিরর লাইনে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানায়, বিলাসবহুল এ শহর নির্মাণের পরিকল্পনার কথা শত শত পৃষ্ঠার গোপন নথির ভিত্তিতে প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয়েছে। নথিগুলো ২০২১ সালের। যুবরাজ সালমান এটাকে ‘কার্বনশূন্য’ শহর হিসেবে দেখতে চান। সেখানে চলবে না কোনো মোটরচালিত গাড়ি। এর বাসিন্দারা তিনবেলা খাবার পাবেন প্যাকেজের আওতায়।
শহরটির উত্তরে থাকছে লোহিত সাগর, পূর্বদিকে আকাবা উপসাগরের উপকূল। যুবরাজ সালমানের পরিকল্পনা অনুযায়ী, শহরটি হবে প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক স্মার্ট সিটি। তিনি মনে করেন, এটি দেশি-বিদেশি পর্যটকের প্রধান আকর্ষণ হয়ে উঠবে।
ডেইলি মেইল অনলাইন জানায়, সৌদি যুবরাজের প্রত্যাশা, ২০৩০ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। তবে ভবন ও নগর পরিকল্পনাকারীরা মনে করছেন, এর পুরো কাজ শেষ হতে ৫০ বছরও লেগে যেতে পারে। পরিবেশবাদীরা বলছেন, এত দীর্ঘ ও উঁচু ভবনের কারণে অতিথি পাখির যাতায়াতের পথ পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে।