ডেঙ্গুজ্বরের ভয়াবহ বিস্তারের মধ্যে রোগটির জীবাণুবাহী এডিস মশার ভয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক অনুষ্ঠানে এসে বক্তব্য ভুলে গেলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অবশ্য অনুষ্ঠানের একেবারে শেষ পর্যায়ে সভাপতির বক্তব্য শেষ হওয়ার পর ভুলে যাওয়া সেই কথা মনে পড়ে তার। আবার মাইক্রোফোন নিয়ে ক্ষমা চেয়ে সেই বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী।
আজ মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে ইএফডি মেশিনের (ইএফডিএমএস) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনুষ্ঠান মঞ্চে অর্থমন্ত্রীর পেছনে দাঁড়িয়েছিলেন সাদা পোশাকের কাস্টমসের এক কর্মী। তার হাতে ছিল মশা মারার একটি ব্যাট। মন্ত্রীর আশপাশে কোনো মশা আসছে কিনা, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছিলেন তিনি। কোনো মশা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে সেটি মেরে ফেলছিলেন। এভাবে অনুষ্ঠান চলার সময় বেশ কয়েকটি মশা মারতে দেখা গেছে এই কর্মীকে।
ইএফডিএমএসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সভাপতির বক্তব্য শেষ হওয়ার পর আবারও বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী। সেই বক্তব্যে তিনি বলেন, বক্তব্য শেষ করার আগে আমার একটি লাইন বলার কথা ছিল বা একটি বিশেষ কথা বলার ছিল। কিন্তু আমি মশার জন্য ওদিকে দৃষ্টি দিতে গিয়ে সেটা ভুলে গেছি। আমি আপনাদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এরপর তিনি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করতে গিয়ে যেন কারোর ওপর অতিরিক্ত চাপ না পড়ে সেদিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান। রাজস্ব আহরণ কীভাবে করতে হবে তার উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি ফ্রান্সের রাজা চতুর্দশ লুইয়ের একটি গল্প বলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালেও বাংলাদেশে ডেঙ্গু ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। সেই বছর অর্থমন্ত্রী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন। এটা ছিল অর্থমন্ত্রী হিসেবে মুস্তফা কামালের প্রথম বছর। জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের দু’দিন আগে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। পরে বাজেট দিতে হাসপাতাল থেকে সরাসরি সংসদে যান অর্থমন্ত্রী। কিছুক্ষণ পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তার হয়ে বাজেট উপস্থাপন করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। ওই বছরের ২৫ জুন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ডেঙ্গুর যন্ত্রণা কী, আমি বুঝি। আল্লাহ যেন কারও ডেঙ্গু না দেয়।
২০২৩ সালে দেশে ডেঙ্গু ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এই বছর ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ১৯১ জন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪৮৫ জনের। ডেঙ্গুতে এক বছরে এত মৃত্যু আর কখনো দেখেনি বাংলাদেশ।