দুইজন ব্যক্তির মধ্যে মারামারি বর্তমান সময়ে খুবই সাধারণ বিষয়। সাময়িক উত্তেজনার কারণে হুট-হাট করেই কখনও কখনও মারামারি বেঁধে যেতে পারে। তবে প্লেন চালানোর সময় মাঝ আকাশেই যদি দুই পাইলটের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে, সেটিও আবার ককপিটের মধ্যেই, তাহলে!
ব্যতিক্রমী হলেও তেমনই এক ঘটনা ঘটেছে বাস্তবেই। জেনেভা থেকে প্যারিস যাওয়ার সময় এয়ার ফ্রান্সের একটি ফ্লাইটে ককপিটের মধ্যেই দুই পাইলটের মারামারির এই ঘটনা ঘটে। রোববার (২৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুন মাসে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা থেকে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস যাওয়ার সময় এয়ার ফ্রান্সের একটি ফ্লাইটে দ্বন্দ্বে জড়ান প্লেনটির দুই পাইলট। এসময় তারা হাতাহাতির পাশাপাশি একে অপরের কলার ধরে মারামারিও করেন। তবে শাস্তি হিসেবে উভয় পাইলটকেই বরখাস্ত করেছে এয়ারলাইন্সটি।
এয়ার ফ্রান্স জানিয়েছে, গত জুনে জেনেভা-প্যারিস ফ্লাইটের সময় ককপিটে লড়াইয়ের জন্য দুই পাইলটকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ককপিটের মধ্যেই মুষ্টিযুদ্ধ সত্ত্বেও ফ্লাইটটি অব্যাহত ছিল এবং নিরাপদে অবতরণ করেছে। এছাড়া দুই পাইলটের বিরোধ আকাশপথে ভ্রমণের বাকি সময়টিতে কোনো প্রভাব ফেলেনি বলেও রোববার একজন এয়ারলাইন কর্মকর্তা বলেছেন।
, জেনেভা থেকে ফ্লাইটটি টেকঅফের (উড্ডয়নের) পরপরই পাইলট ও কো-পাইলটের মধ্যে বিবাদ দেখা দেয় এবং তারা একে-অন্যের কলার ধরে আঘাত-পাল্টা আঘাত করেন।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, পরিস্থিতি বিবেচনায় কেবিন ক্রু তখন হস্তক্ষেপ করেন। এতে পরিস্থিতি ঠান্ডা হলেও আবার যেন মারামারি না বাঁধে তা নিশ্চিত করতে ফ্লাইটটির একজন ক্রু পাইলটদের সাথে ককপিটে বাকি সময়টা অবস্থান করেন।
, ফ্রান্সের এয়ার ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বিইএ গত বুধবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর ককপিটে পাইলটদের এই লড়াইয়ের খবরটি সামনে আসে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, এয়ার ফ্রান্স’র কয়েকজন পাইলটের নিরাপত্তা প্রোটোকলের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধার অভাব রয়েছে।
এছাড়া ফরাসি এই তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে উড্ডয়নের সময় এয়ার ফ্রান্সের পাইলট ও কর্মীদের অনিয়মের আরও বেশ কয়েকটি ঘটনার বিবরণ প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, গত এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটির জন এফ কেনেডি (জেএফকে) বিমানবন্দর থেকে এয়ার ফ্রান্সের একটি ফ্লাইটের প্যারিসে অবতরণ করার সময় নিয়ন্ত্রণ সমস্যায় পড়ার ঘটনাটি নিয়েও তারা তদন্ত করেছে।
এয়ার ফ্রান্স বলেছে, রিপোর্টে আসা অভিযোগগুলোর প্রতিক্রিয়া হিসাবে তারা একটি নিরাপত্তা নিরীক্ষা চালাচ্ছে। একইসঙ্গে এয়ারলাইন্সটি বিইএ’র সুপারিশগুলোও অনুসরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এসব সুপারিশের মধ্যে পাইলটদের ফ্লাইটের মধ্যেই অধ্যয়ন করার অনুমতি দেওয়া এবং পদ্ধতি মেনে চলার বিষয়ে প্রশিক্ষণ ম্যানুয়ালগুলোকে আরও কঠোর করার বিষয়টি রয়েছে।
এয়ারলাইন্সটি দাবি করেছে, তারা প্রতিদিন হাজার হাজার ফ্লাইট পরিচালনা করে এবং ফরাসি তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে মাত্র চারটি নিরাপত্তা ত্রুটির ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।