ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে রয়েছে হাইতি। বিভিন্ন গ্যাংয়ের মধ্যে সংঘর্ষ, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সংকটের কারণে দেশটি এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। জাতিসংঘের নিযুক্ত হাইতির বিশেষ দূত এমন মন্তব্য করেছেন।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে হাইতির দূত হেলেন লা লাইম বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা সংঘাত এবং জাতিসংঘের খাদ্য সহায়তা গুদামে হামলার ঘটনা দেশটির খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির প্রতিবাদে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে এবং পরিবহন পরিষেবাও বন্ধ আছে। হাজার হাজার মানুষ প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরির পদত্যাগ দাবি করেছেন।
গত ১১ সেপ্টেম্বর জ্বালানির ক্ষেত্রে সরকারের ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন এরিয়েল হেনরি। ফলে দেশজুড়ে পেট্রল এবং ডিজেলের দাম এক লাফে বেড়ে গেছে। এতে দেশজুড়ে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
তখন থেকেই রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্সসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও লুটপাটের ঘটনা বেড়ে গেছে। লা লাইম সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচির স্থানীয় গুদামে দফায় দফায় হামলার কারণে প্রায় দুই হাজার টন খাদ্য নষ্ট হয়েছে। এই খাদ্যে মূল্য প্রায় ৫০ লাখ ডলার।
তিনি বলেন, এই খাদ্য দিয়ে আগামী মাসে প্রায় দুই লাখ পরিবারকে সহায়তা দেওয়া যেত। এদিকে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক ভ্যালেরি গুয়ারনিয়েরি বলেন, এটা দুঃখজনক যে, হাইতির পরিস্থিতি হতাশার নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, এক দশকের মধ্যে মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ স্তরে উঠেছে এবং দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য সহায়তার উপর নির্ভর করছে।
অপরাধ গোষ্ঠীগুলো হাইতির সব সমস্যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব গোষ্ঠীর মধ্যকার সহিংসতায় শত শত মানুষ নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
এদিকে হাইতির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন ভিক্টর জিনিয়াস জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, কিছু ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ ছাড়া তার দেশে সহিংসতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আছে এবং এই দ্বীপের কিছু অংশে শান্তি ফিরে এসেছে।