মিয়ানমারের শান্তি পরিকল্পনা পর্যালোচনা করছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শীর্ষ কূটনীতিকরা। দেশটির সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের দুই বছরেরও বেশি সময়েও সহিংসতা বন্ধ করতে পারেনি। আর এতে বাড়ছে হতাশা। এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল সোমবার শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে ফের আলোচনায় বসেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
মিয়ানমার, দক্ষিণ চীন সাগরে আচরণবিধি, অঞ্চলের অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক অপরাধ এবং অন্যান্য ইস্যু নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় বৈঠক করছেন অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
মিয়ানমার আসিয়ানের সদস্য হলেও ২০২১ সালে অং সান সু চির নেতৃত্বে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর আসিয়ানের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে ডাকা হয়নি জান্তাদের। এই অভ্যুত্থানের জেরে মিয়ানমার জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সহিংস বিক্ষোভ। মিয়ানমার নিয়ে একটি শান্তি পরিকল্পনায় সম্মত হয়েছে আসিয়ান। এটি পাঁচ দফা ঐকমত্য নামে পরিচিত। সব পক্ষের মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহ্বান জানানো হয়েছে এতে। তবে মিয়ানমারের জেনারেলরা এটাকে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছেন না।
ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি পাঁচ দফা পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, আমরা ‘ফাইভ পিসি’ বাস্তবায়ন নিয়ে ব্যাপক পর্যালোচনা করব। আলোচনার জন্য একটি সুপারিশ প্রস্তুত করব। তিনি বলেন, আসিয়ান তখনই পূর্ণ শক্তিতে এগিয়ে যেতে পারবে, যখন আমরা মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ ও স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করতে সক্ষম হব। মিয়ানমারের সংকট ১৯৬০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত আসিয়ানের কার্যকারিতা এবং ঐক্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
সংগঠনটি কয়েক দশক ধরে একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার এবং ঐকমত্যের মাধ্যমে চুক্তিতে পৌঁছানোর নীতিতে কাজ করেছে। তবে মিয়ানমার ইস্যুতে তেমন কিছুই করতে পারেনি আসিয়ান। ইন্দোনেশিয়া বলছে, মিয়ানমার সংকট সমাধান খুঁজে বের করার জন্য ‘পর্দার আড়ালে’ চেষ্টা চললেও এগুলো আলোর মুখ খুব কমই দেখছে। আসিয়ান নেতারা সপ্তাহের শেষের দিকে জাকার্তায় জড়ো হবেন।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য সদস্য দেশগুলোর নেতারা সেখানে বৈঠক করবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এতে যোগ দেবেন না। তার বদলে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস উপস্থিত থাকবেন। চীনের পক্ষ থেকে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং।