বাড়তি দামে মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে একটি সিন্ডিকেট প্রতিদিন সাড়ে ৬ কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)-তে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এ অভিযোগ জানিয়ে বলে, সরকার ডিমের বাজারে অস্থিরতা কমাতে ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। এতে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। শুধু তাই নয়, খামারিরা উৎপাদন কমিয়ে দিলে এক পিস ডিমের দাম ২০ টাকা হয়ে যেতে পারে। কিন্তু পোলট্রি ফিড ও বাচ্চা আমদানির সুযোগ দিলে এই সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব হবে। এতে মুরগি ও ডিম কম দামে পাওয়া যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার বলেন, তিন সপ্তাহ আগে একটি ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা বিক্রি হতো ৩৫ টাকায়। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে একটি বাচ্চার দাম বেড়ে ৬০ টাকা হয়েছে। এটা কীভাবে হলো? বাচ্চার উৎপাদন খরচ তো বাড়েনি। বাড়লেও এক থেকে দুই টাকা বেড়েছে। আবার একটি লেয়ারের বাচ্চা ৭৫ টাকা বিক্রি করছে। সোনালি এবং কালার বার্ড একটি বাচ্চার উৎপাদন খরচ ২২ টাকা, খামারিরা কেনেন ৫৮ টাকায়। এভাবে করপোরেট সিন্ডিকেট প্রতিদিন সাড়ে ৬ কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করছে।
সংগঠনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় মুরগির বাচ্চার দাম উৎপাদন খরচের সঙ্গে মুনাফা যোগ করে ৩২ টাকা বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু এ খাতের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর অ্যাসোসিয়েশন হাইকোর্টে রিট করে সেই কমিটি বন্ধ করে দিয়ে তাদের খেয়াল খুশিমতো পোলট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সুমন হাওলাদার বলেন, করপোরেট গ্রুপ এই সিন্ডিকেট করছে। বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে বাচ্চা ও ফিড আমদানির অনুমোদন দিতে হবে। তাহলে ডিম আর আমদানি করতে হবে না। বরং আমরা ডিম রপ্তানি করতে পারব।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর হয়ে কাজ করছে। তারা খামারিদের নিয়ে চিন্তা করে না । ক্ষুদ্র খামারিরা দিন দিন নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, বাচ্চা আমদানি করা হোক, ফিড আমদানি করা হোক। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে এক বস্তা ফিডের দাম ২ হাজার ৭০০ টাকা। আর আমরা কিনছি ৩ হাজার ৫০০ টাকায়। আবার ভারতে একটি ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম ২৮ টাকা, লেয়ার মুরগির বাচ্চার দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা। খামারি যদি বাচ্চা, ফিড, মেডিসিন কম দামে পান, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই মুরগি ও ডিমের দাম কমে যাবে। ভোক্তা কম দামে কিনতে পারবেন।