স্পেনের লা লিগায় তারা ছিলেন একে অন্যের শত্রু। খেলতেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই ক্লাবে। লিওনেল মেসি খেলতেন বার্সেলোনায়। গ্যারেথ বেল খেলতেন বার্সার চিরশত্রু রিয়াল মাদ্রিদে। স্পেনের চিরশত্রু ক্লাব দুটির হয়ে তারা মাঠে অনেক বারই মুখোমুখি হয়েছেন। তো মাঠে যখন তারা মুখোমুখি হতেন, ক্লাবের শত্রুতার রেশ ভর করত তাদের মধ্যেও। সেই শত্রুতার রেশ ধরে তারাও উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, কথা কাটাকাটি, ধাক্কাধাক্কি কাণ্ডে জড়িয়েছেন। তবে সময়ের স্রোতে বেল হয়তো সেই শত্রুতা ভুলে গেছেন। নয়তো এক সময়ের শত্রু মেসিকে কেন আগ বাড়িয়ে নিজের অভিজ্ঞতা বিতরণ করতে যাবেন।
হ্যা, দরদী বন্ধু হয়ে বেল নিজের অভিজ্ঞতাই বিতরণ করলেন মেসিকে। ইউরোপ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) খেলতে যাচ্ছেন মেসি। নাম লেখাতে যাচ্ছেন ইন্টার মায়ামিতে। সব কিছু ঠিকঠাক মতো হলে আগামী ২১ জুলাই হয়তো ইন্টার মায়ামির হয়ে অভিষেক হবে মেসির। তো এমএলএস খেলার অভিজ্ঞতাটা কেমন, নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে মেসিকে আগে থেকেই জানিয়ে রাখলেন বেল।
তাছাড়া এমএলএসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে নিন্দুকেরা যে বাঁকা কথা শোনাতে শুরু করেছে, নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে মেসিকে হয়তো সেই খোঁচা থেকেও বাঁচানোর চেষ্টা করলেন বেল। রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক তারকা বেল লস অ্যাঞ্জেলস এফসির হয়ে ২০২২ সালে খেলেছেন এমএলএসে। যুক্তরাষ্ট্রের এই লিগ নিয়ে তার মূল্যায়ন ‘এই লিগ খুবই ঠান্ডা।’ এই ‘ঠান্ডার’ অর্থ, এমএলএসে হারকে খুব সাধারণ ঘটনা হিসেবেই দেখা হয় এবং সহজেই মেনে নেওয়া হয়, ইউরোপের মতো তুলকালাম হয় না।
ইউরোপ ছেড়ে মেসির ইন্টার মায়ামিতে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে দুই-এক জন বাঁকা চোখেও দেখছে। মেসির সাবেক ক্লাব বার্সেলোনা যেমন তার ঘোষণার দিনই একটা খোঁচা মেরেছে। মেসিকে অভিনন্দন জানিয়ে কাতালান ক্লাবটি ব্যাঙ্গাত্মক সুরে বলে, ‘সে (মেসি) হয়তো তুলনামূলক কম চাপে খেলতে চাচ্ছে।’
বার্সার দাবিটা ভুল নয়, সত্যিকার অর্থেই ইউরোপের তুলনায় এমএলএসে চাপ অনেক কম। তবে বেল বাতলে দিলেন এমএলএসে খেলার স্বস্তিটা অন্যখানে, ‘আপনি যদি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ম্যাচ হারেন, ব্যাপারটা এমন দাঁড়ায় যে, আপনি পুরো দুনিয়াটাই হারিয়ে ফেলেছেন। দুনিয়াটাই শেষ হয়ে গেছে। হারের পর আপনাকে ছিঁড়ে ফেলা হবে। সেখানে হারের পর বাড়ি ফিরতে হয় চাপ নিয়ে, মন খারাপের অনুভূতি নিয়ে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে হারকে খুবই স্বাভাবিকভাবে দেখা হয়। মন খারাপের কোনো ব্যাপারই নেই। তাছাড়া এমএলএসে তো অবনমন বলেই কিছু নেই।’
আর জিতলে? বেলের দাবি, ‘তাদের কাছে প্রতিটি জয়ই মূল্যবান। তারা হারকে যেমন স্বাভাবিকভাবে নেয়, তেমনি জিতলে এমনভাবে উদযাপন করে যেন বড় কোনো শিরোপা জিতেছে। এই ব্যাপারটা আমার খুবই ভালো লাগে।’ মেসিরও নিশ্চয় ভালো লাগবে?