মরুর দেশে বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র ২ দিন বাকি। গত বুধবার বিশ্বকাপের আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বড় জয় পেয়ে গতকাল কাতারে পা রেখেছে লিওনাল মেসিরা।
বর্তমানে দারুণ ছন্দে রয়েছে আর্জেন্টিনা দল। এ দলের তারকা খেলোয়াড় মেসির শেষ বিশ্বকাপ এটি। তাই দলের প্রতিটি খেলোয়াড় তাদের সেরাটা দিয়ে এ মেসির হাতে ট্রফি তুলে দিতে চায়। অন্যদিকে লিওনাল মেসিকে বিশ্বকাপ নিয়ে দেশে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন প্রয়াত কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার কন্যা দালমা। সমপ্রতি এক ভিডিওতে ম্যারাডোনা কন্যা দালমা বলেন, মনে রেখো, আমার বাবা কিন্তু তোমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। ধরে নিতে পার, তিনিই এই দলের দ্বাদশ ব্যক্তি। এ বারের বিশ্বকাপে বাবার না থাকা প্রত্যেক মুহূর্ত উপলব্ধি করছি। তাই মেসির কাছে আমার একান্ত অনুরোধ, এবার বিশ্বকাপ নিয়ে দেশে ফিরতেই হবে। তা হলেই বাবা সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাবেন। মনে রেখো, উনি কিন্তু তোমাদের দেখছেন।
আগামী ২২ নভেম্বর কাতার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। গ্রুপের বাকি দুই দল মেক্সিকো এবং পোল্যান্ড।
কাতারেই শেষবারের মতো ফুটবল বিশ্বকাপে নামছেন মেসি। বিশ্বকাপ জিতে তিনিও বিদায় স্মরণীয় করে রাখতে চাইছেন। একই সঙ্গে ম্যারাডোনাকে টপকে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে আর্জেন্টিনার অধিনায়কের সামনে। এখনো পর্যন্ত ফুটবল বিশ্বকাপে আর্জেন্টাইন হিসেবে সব থেকে বেশি ম্যাচ খেলেছেন ম্যারাডোনা। চারটি বিশ্বকাপ মিলিয়ে মোট ২১ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। অন্যদিকে মেসি চারটি বিশ্বকাপে খেলেছেন ১৯ ম্যাচ। অর্থাৎ এই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচে খেললেই দিয়াগোর এই নজির ভেঙে ফেলবেন ‘এলএমটেন’।
এমনকি আসন্ন বিশ্বকাপে ম্যারাডোনার গোলের সংখ্যাকেও টপকে যেতে পারেন মেসি। বিশ্বকাপে ২১ ম্যাচ খেলে ৮টি গোল করেছেন ম্যারাডোনা। এর মধ্যে ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপে ৫ ম্যাচে ২ গোল করেছিলেন তিনি। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে ৭ ম্যাচে করেছিলেন ৫ গোল। ম্যারাডোনার নেতৃত্বে সেই মেক্সিকো বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আর্জেন্টিনা। ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপে ৭ ম্যাচ খেলে একটিও গোল করতে পারেননি দিয়াগো। ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপে ২ ম্যাচ খেলে এক গোল করেছিলেন তিনি। বিশ্বকাপের মাঝেই ডোপ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে আর খেলতে পারেননি দিয়াগো। অন্যদিকে মেসি বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত ৬টি গোল করেছেন। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে ৩ ম্যাচ খেলে ১টি গোল করেছেন তিনি। ২০১০ সালে ৫ ম্যাচ খেলে একটিও গোল করতে পারেননি মেসি। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে ৭ ম্যাচে ৪টি গোল করেছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে ৪ ম্যাচে ১টি গোল করেছেন মেসি। অর্থাৎ, এ বারের বিশ্বকাপে ৩টি গোল করলেই ম্যারাডোনাকে টপকে যাবেন মেসি। এমনকি বিশ্বকাপের মঞ্চে অ্যাসিস্টের দিক থেকেও ম্যারাডোনাকে পিছিয়ে দিতে পারেন মেসি। ৮টি অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। এর মধ্যে ৫টি অ্যাসিস্ট করেছিলেন ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে। মেসি এখনো পর্যন্ত বিশ্বকাপে ৫টি অ্যাসিস্ট করেছেন। অর্থাৎ, এবারের বিশ্বকাপে চারটি অ্যাসিস্ট করলেই ম্যারাডোনাকে টপকে যাবেন মেসি।