একটা ট্রফির জন্য কতই না আরাধনা! ফুটবলে সম্ভাব্য সব কিছু জিতেছিলেন, শুধু একটা ট্রফি ছাড়া। সেটি হলো বিশ্বকাপ। লিওনেল মেসির আক্ষেপের নাম ছিল বিশ্বকাপ ট্রফি। অবশেষে আর্জেন্টাইন খুদে জাদুকরের আক্ষেপ ঘুচল কাতারে। ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ৩৬ বছরের খরা কাটিয়েছে আলবিসেলেস্তারা।
৩৫ বছরে এসে মেসির যেন সব অপূর্ণতা ঘুচে গেল। জীবনের শুরু এবং শেষটা কী আশ্চর্যজনকভাবে মিলে গেল! ২০০৫ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ খেলতে গিয়ে দলকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিলেন মেসি। সেই টুর্নামেন্টেও সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে জিতেছিলেন গোল্ডেন বুট। পাশাপাশি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়ে মেসি গোল্ডেন বলও জিতেছিলেন।
ক্যারিয়ার সায়াহ্নে নিজের শেষ বিশ্বকাপে এসেও আর্জেন্টিনাকে চ্যাম্পিয়ন বানাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন মেসি। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বলও জিতেছেন। মাঝে কেটে গিয়েছে ১৭টি বছর। অবশ্য এই সময়ে মেসির অর্জন যে কিছুই নেই তা বলা যাবে না! এটা ঠিক যে ক্লাব স্তরে যে পারফরম করছিলেন সেটির পুনরাবৃত্তি হচ্ছিল না আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে। যা নিয়ে একদল সমালোচক সবসময়ই উচ্চকিত ছিলেন। অপবাদ জুড়ে দেওয়া হয়, ‘মেসি বার্সেলোনার যতটা ততটা আর্জেন্টিনার নয়।’
আসলেও কি তাই, মেসি কিছুই করেননি দেশের জন্য! ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ ট্রফিটা হাতছোঁয়া দূরত্বে থাকার পরও সেটি ছুঁতে না পারার ব্যাকুলতা মেসিকে পুড়ে পুড়ে খাক করে দিয়েছে! টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বলও তাকে সান্ত্বনা দিতে পারেনি।
মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকার শিরোপাও হাত ছোঁয়া দূরত্বে এসে ফসকে যাচ্ছে! টানা দু’বার ফাইনালে হার! মানসিক যন্ত্রণায় মেসি অবসরেরই ঘোষণা দিয়ে দিলেন! আবার ফিরে এলেন। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে পর্যুদস্ত হয়ে শেষ ষোলো থেকেই বিদায়। আরো একবার মেসির মনে অবসরের ভাবনা ডালপালা মেলছিল! কিন্তু একসময়কার তারই সতীর্থ লিওনেল স্কালোনি দায়িত্ব নিয়ে মেসি ও তার দলকে মন্ত্র যপে দিলেন! যে মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে চার বছর পর সেই ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্বজয়ের উদযাপন করছেন মেসি! ভাগ্যরেখা বুঝি একেই বলে!