যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া নজিরবিহীন সামরিক বিমান মহড়া শুরু করেছে। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় দুই দেশের শত শত যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, ভিজিল্যান্ট স্টর্ম নামের এই মহড়া চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। ২৪০টি যুদ্ধবিমান এই অভিযানে অংশ নিচ্ছে। এই প্রথম দেশ দুটির এতসংখ্যক যুদ্ধবিমান এ ধরনের ইভেন্টে অংশ নিচ্ছে।
উত্তর কোরিয়া তাদের যৌথ এই সামরিক মহড়ার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, আগ্রাসনের জন্য ওয়াশিংটন ও সিউল অনুশীলন করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সাম্প্রতিক মহড়ার জবাবে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পাশাপাশি আকাশ ও সাগরপথে সামরিক মহড়া চালায় উত্তর কোরিয়া। এ নিয়ে কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা নতুন করে মাত্রা পেল। কয়েক দিন আগেও উত্তর কোরিয়া তাদের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূল থেকে দুটি স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (এসআরবিএমস) ছুড়ে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ (জেসিএস) জানায়, গত শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার খাংওন প্রদেশের থুংছান এলাকা থেকে এগুলো ছোড়া হয়। যে কোনো ধরনের উসকানি থেকে প্রতিবেশী দেশটিকে বিরত রাখার লক্ষ্য নিয়ে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা দক্ষিণ কোরিয়ার বড় ধরনের সামরিক মহড়ার শেষ দিন এসব ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ং দক্ষিণের সামরিক বাহিনীর এই মহড়াকে ‘উসকানি’ অবহিত করে এর পালটা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। আন্তঃকোরিয়ান সীমানা থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূর থেকে ক্ষেপণাস্ত্র দুটি ছোড়া হয়। এ অঞ্চলটি উত্তর কোরিয়া আগে যেসব জায়গা থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তার থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক কাছাকাছি।
সিউলের দাবি, বিমান মহড়া উদ্দেশ্য করেই স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দুটি উৎক্ষেপণ করেছে পিয়ংইয়ং। এর আগে ২৯ সেপ্টেম্বর মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস দক্ষিণ কোরিয়া সফর শেষ করার কয়েক ঘণ্টা পরই ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোড়ে উত্তর কোরিয়া। তারও আগে ২৪ সেপ্টেম্বর স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে উত্তর কোরিয়া। জুনের শুরুতে আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর সেপ্টেম্বরে এক সপ্তাহে সাত দফায় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে দেশটি। ২০২২ সালে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন অন্য যে কোনো বছরের চেয়ে বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছেন।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে শনিবার রাতে হ্যালোইন উত্সব ট্র্যাজেডিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫৪ জনে পৌঁছেছে। এদের মধ্যে ১৪টি দেশের অন্তত ২৬ জন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৫ বিদেশিসহ আরো ১৩২ জন। রবিবার দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে। আহত বিদেশিদের মধ্যে বেশির ভাগই বাড়ি ফিরে গেছেন। ছয় জন এখনো চিকিত্সাধীন। নিহত বিদেশিরা চীন, ইরান, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ভিয়েতনাম, উজবেকিস্তান, নরওয়ে, কাজাখস্তান, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, অস্ট্রিয়া এবং অন্য দুটি দেশের নাগরিক।