যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই। যুদ্ধের ভয়বহতা কতটা তীব্র, যন্ত্রণাদায়ক এবং অমানবিক তা একবিংশ শতাব্দীতে বলার
অপেক্ষা রাখেনা । আজকের বিশ্বে যা কিছু সংকট তার সবকিছুর মূলে রয়েছে যুদ্ধ এবং যুদ্ধ বাজার।
যুদ্ধ ধ্বংস করে চলছে মানবিকতা, মূল্যবোধ, বিশ্ববিবেক এবং সকল সৃজনশীলতাকে। সভ্যতা, মানবিকতা, জাতীয়তা, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক, সামাজিক সম্পর্ক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং সৌহর্দ্য টিকিয়ে রাখতে সৃজনশীল মানবিক পৃতিবী গড়তে যুদ্ধ বন্ধের বিকল্প নেই। যুদ্ধ নয়, শান্তি একটি মানবিক এবং সামাজিক প্রযুক্তি যা মানবজাতির অগ্রগতি এবং সামাজিক সমন্বয়ে একটি মহৎ ভূমিকা পালন করে। শান্তির পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য যুদ্ধ ও সংঘর্ষ দ্বারা অগ্রসর হওয়ার পরিবার্য কোন মৌনস্বর উপায় নয়। শান্তি এবং সহযোগিতার মাধ্যমে মানবজাতি আগামীর দিকে এগিয়ে যাবে এবং একটি উন্নত ও সামাজিকভাবে সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
যুদ্ধ মানবজাতির জীবনে একটি অত্যন্ত ধ্বংস প্রবৃত্তি বয়ে আনে। যুদ্ধের ফলে নষ্ট হয়ে যায় মানব জীবন, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, এবং প্রাকৃতিক সম্পদ। যুদ্ধের সাহায্যে তথ্য প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞান উন্নতি হয় না, বরং এটি বিপজ্জনক প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবস্থাপনার কারণে হৃতপিন্ডে ধ্বংস এনে দেয়। এটি সম্প্রদায়িক বৈচিত্র্য ও সাংঘাতিকতা এনে দেয়, যা জীবনও স্বাস্থ্যকে ব্যক্তিগত ও সামাজিক স্তরে ভেঙে দেয়।
পৃথিবী একটি অসীম বিশাল জায়গা, যেখানে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, সংস্কৃতি এবং ভাষা নিজস্ব আদর্শ ও মূল্যবোধে বিভক্ত আছে। তাই এই বিভিন্নতা সহজে আসতে পারে বা আসতেই পারে সংঘটিত হতে পারে যুদ্ধ ও অসন্তোষের রূপে। কিন্তু আমরা সম্প্রদায়িকতার মধ্যে শান্তির মূল্যবোধটি বৃদ্ধি করার প্রতি নিরাপদ প্রতিবদ্ধ আছি, কারণ শান্তি হল একটি সুন্দর স্বপ্ন, একটি বেশী উন্নত এবং সমৃদ্ধ পৃথিবীর স্বপ্ন। মানবতা সমগ্রকে জড়িত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা অত্যধিক মর্মস্পর্শী এবং সম্প্রদায়িক উন্নতির পথে এগিয়ে যেতে পারে।
এই যে বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং ধর্মের আদর্শ, বিচার এবং মৌলিক অধিকারের মধ্যে প্রেম এবং সহযোগিতা সৃষ্টি
করে, তা আমাদের একান্ত শান্তি ও সম্প্রেরণার জন্য একটি মাধ্যম হতে পারে। যুদ্ধের দায়িত্ব এবং বৃদ্ধি থেকে আমরা বিরত থাকার জন্য আমাদের সমগ্র প্রয়াস করা আবশ্যক। যুদ্ধ নিয়ে কেবল একটি দেশ নয়, বরং এটি পৃথিবীর সমস্যার সমাধান নয়। যুদ্ধের ফলে অপরাধীর প্রতি বিত্রাসনা এবং আবিষ্কার হয়, যা শান্তি এবং সহযোগিতার পথে আঘাত পৌঁছাতে পারে।
যুদ্ধের কোন ইতিবাচক দিক নেই, যার কারণে আমরা যুদ্ধকে সমর্থন করতে পারি। যুদ্ধের মধ্যে যা আছে তা শুধু
ধ্বংস আর ধ্বংস এবং সাম্রজ্যবাদীদের অস্ত্র ব্যবসা বৃদ্ধি আর বৃদ্ধি। শান্তির জন্য কখনো যুদ্ধের প্রয়োজন হয় না
প্রয়োজন ত্যাগ, সমঝোতা, মানবিক প্রেমসমৃদ্ধ জ্ঞান ও দক্ষতা। মানব সভ্যতা সততা, উন্নতি, ও সামাজিক সমৃদ্ধির পথে অগ্রসর হতে গিয়ে প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, ও সাংস্কৃতিক আদর্শগুলি অতীত চুক্তির মাধ্যমে মানবজাতির অগ্রগতি এবং সামাজিক সমন্বয়ের দিকে এগিয়ে যেতে চেষ্টা করে।
যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই এই নীতিমূলক ধারণাটি আমাদের মানবিক ও সামাজিক প্রগতির দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে। যুদ্ধের ফলাফল অত্যধিক নাশক হয় এবং এটি সমাজ এবং অব্যবস্থা উৎপন্ন করে। যুদ্ধের মাধ্যমে জীবনস্তর হানি, সংসারের ভাঙ্গা, অর্থনৈতিক পীড়িত এবং সামাজিক ক্ষতি উৎপন্ন হয়। মানবজাতির ইতিহাস পৃথিবীর মুখোমুখি যুদ্ধ ও সংঘর্ষের সাক্ষী হয়ে আসে। শতকরা শতক ধরে মানবসমাজ বিভিন্ন কারণে যুদ্ধের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেছে। সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে, আমরা যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই এমন একটি আদর্শমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারি যা আমাদের পৃথিবীকে আরও শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ এবং সাক্ষরিকভাবে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
মানবজগত চুক্তি স্বাগত জানায় যে, যুদ্ধ কোনো সমস্যার সমাধান নয়। এটি শুধুমাত্র বহিষ্কারের একটি উপায় নয়, বরং এটি সমস্যার আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে। যুদ্ধের সাথে আসা নিরাপত্তা অস্ত্রাগার এবং সহযোগিতা সংস্থা সহ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ চেষ্টা গুলি স্থাপনে ব্যর্থ হয়েছে। তাছাড়া, যুদ্ধের ফলে হতে পারে অমুল্য মানব জীবনের হানি, অর্থনৈতিক ক্ষতি, সমাজের বিপ্লব, এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের ধ্বংসাত্মক প্রভাবের প্রস্তাবনা।
এখানে নিরাপত্তা, ন্যায় এবং মানব অধিকারের মূল্যায়ন অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। সমাজের প্রতিটি সদস্যের জীবন এবং মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা ও জাগরূকতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। ন্যায় বিচারের স্বাধীনতা, সমতা, এবং মানবিক মূল্যায়নের মৌলিক আইন। এটি একটি শান্ত সমাজ এবং স্থিতিস্থাপনের জন্য শ্রেষ্ঠ মাধ্যম।
রাজনীতিতে একটি শান্তির ভাবনা ও প্রয়োজনীয় যোগাযোগ বৃদ্ধি প্রয়োজন। দেশের অংশীদারসমূহ এবং আন্তর্দেশীয় সম্পর্কের মাধ্যমে সমস্ত বিষয়ে আলোচনা এবং সমঝোতা সম্ভব। এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নতি এবং সম্প্রদায় বিচয়নে সাহায্য করতে পারে। বৃদ্ধি এবং অগ্রসর হতে গিয়ে এই যুগে, প্রয়োজন সকলের একসাথে কাজ করার এবং সামাজিক ন্যায়ের মাধ্যমে একটি বেশি উন্নত ও সমৃদ্ধ বিশ্ব নির্মাণ করার। এটি শিক্ষা, সৃষ্টি, এবং প্রগতির মাধ্যমে সম্প্রদায় এবং রাষ্ট্রের বিকাশ নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে। এই প্রস্তাবনা নিয়ে, আমরা যুদ্ধ নীতি এবং সাম্রাজ্যিক শক্তির প্রতি আমাদের নম্র অনুরোধ জানাই, যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানাই এবং শান্তি এবং সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা সম্প্রদায়, রাষ্ট্র এবং বিশ্বে উন্নতি ও সামাজিক ন্যায় নিশ্চিত করার সমর্থন জানাই।
আমরা একটি শান্তিপূর্ণ এবং উন্নত বিশ্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, এবং এটি করার জন্য আমরা সবাই একসাথে কাজ করতে প্রস্তুত। যুদ্ধ সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি করে, মানুষের মধ্যে হিংসা, বিদ্ধেষ ছড়ায়, সম্প্রীতি ধ্বংস করে। রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব বিশ্বের বড় দুটি সরবরাহ চেইনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে। যার ফলে চাপ পড়েছে বিশ্বব্যাপী খাদ্য এবং জ্বালানী নিরাপত্তার উপর। বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটেরবর্তমান এই পরিস্থিতি কোভিড-১৯, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতের মতো।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল তাদের পর্যবেক্ষণে দেখিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সারাবিশ্বে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ব্যাপক হারে বেড়েছে। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে জ্বালানী তেলের দাম এক বছর
আগের একই সময়ের তুলনায় ৬৭.৬% বেশি ছিল। একইভাবে, প্রাকৃতিক-গ্যাসের দাম বেড়েছিল ২০০% এরও বেশি। অ্যালুমিনিয়ামের দাম গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চো স্তরে এবং খাদ্য পণ্যের দামও একইভাবে বাড়ছে। গমের মতো খাদ্য পণ্যের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চে স্তরে পৌঁছেছে। নভেম্বর ২০২১ থেকে জানুয়ারী ২০২২ পর্যন্ত খাদ্যের গড় মূল্য আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১.৮% বেড়েছে। যুদ্ধের কারণে জ্বালানীর দাম বৃদ্ধি অনেক উন্নয়নশীল দেশেও মুদ্রাস্ফীতির চাপ সৃষ্টি করেছে। যদিও প্রভাবগুলি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে আটকে দেবে এমনটা ধরে নেওয়া ঠিক হবেনা, তবুও এই মূল্যবৃদ্ধি বিশ্বব্যাপী মানুষের ক্রয়ক্ষমতা এবং উন্নয়ন ঝুঁকি তৈরি করে। তাই, বৈশ্বিক খাদ্য সংকট ও জ্বালানী ঝুঁকির খারাপ প্রভাব মোকাবেলায় এখনই সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এজন্য স্বাভাবিকভাবেই সবার আগে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তার উপর ফোকাস দেওয়া উচিত।
উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত বিশ্বের দুর্বল গোষ্ঠীর জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি নিত্যপণ্যের ভর্তুকি। অবশেষে, চলমান ভূ-রাজনৈতিক ঘটনাগুলোতে আমরা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনের ভঙ্গুরতা দেখতে পাই। এই সরবরাহ সংকট সম্ভাব্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। এটি আরও ভাল এবং নিরাপদ সরকারি ক্রয় পদ্ধতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তাকে নির্দেশ করে। কম সম্পদ, কম রিসোর্স কিন্তু আরও বেশি পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। আরও উন্নত বন্টন ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি বাজার ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এবং উপকরণের মাধ্যমে উন্নত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং হেজিং প্রক্রিয়া গড়ে তোলা অপরিহার্য।
আমরা যদি যুদ্ধের অতীত ইতিহাস দেখি তবে সেখানে দেখি কোন যুদ্ধই মানব সভ্যতার জন্য কল্যাণকর ছিলা না। প্রতিটি যুদ্ধ এবং যুদ্ধের পরবর্তী অবস্থা ছিল খুবই ভয়াবহ উদ্বেগজনক। যুদ্ধ কখনো সভ্যতার ইতিবাচক বা সৃজনশীল পরিবর্তন আনতে পারে না, যার কারণে আমরা কোনভাবেই যুদ্ধকে সমর্থন করতে পারি না কিংবা করি না। যুদ্ধের মধ্যে আছে শুধু ধ্বংস আর ধ্বংস এবং সাম্রাজ্যবাদীদের আদিপত্য বিস্তার। যুদ্ধ ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ধ্বংস করে। যারা মানবাধিকার লংঘনের কথা বলে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছেন সেই তারাই আজ অস্ত্র ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখার জন্য দেশে দেশে যুদ্ধ বাধিয়ে রেখেছেন।
মানব সভ্যতা ইতিহাসে শান্তির অত্যধিক মূল্যাংকন হয়েছে, যা জীবনের অমূল্য একটি উপহার। যুদ্ধের উৎস সদা অসন্তোষ এবং দ্বন্দ্বতাত্ত্বিক ধারণা থেকে আসে, কিন্তু শান্তি না হলে মানব সমাজের উন্নতি এবং সমর্থন সম্পন্ন হতে পারে না। শান্তির সাধারণ প্রতীক হল একাত্তরতা, সহযোগিতা, মৌলিক অধিকার এবং সমঝোতা। এটি একটি সৃজনশীল পরিস্থিতি তৈরি করে, যা যুদ্ধের ধারণার বিপরীত। যুদ্ধ ব্যক্তিগত এবং সামাজিক নরকে প্রদর্শন করে, যেখানে বিপক্ষের নিমিত্তে ব্যক্তিগত প্রতিবন্ধি হওয়া যায়। অবশ্য, এটি ব্যক্তিগত অধিকার এবং ন্যায়পরায়ণ সমাজের মূল সৌন্দর্যও সর্বনাশ করতে পারে।
শান্তি মানব সমাজের একটি মৌলিক অধিকার এবং জীবনের একটি প্রাথমিক প্রয়োজনীয়তা। শান্তির গুরুত্ব অপরিসীম। এটি একটি সুস্থ, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য প্রাধান্যমূলক শর্ত। শান্তি একটি দেশের অগ্রগতি এবং বৃদ্ধির সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শান্তির মাধ্যমে ভূখণ্ডে সহযোগিতা ও সহমর্মিত সম্পর্ক উন্নয়ন করা যায়, যা আবারও যুদ্ধের পথে অগ্রসর হওয়ার প্রেক্ষিপ্ত অবস্থা তৈরি করতে পারে। সকল সুযোগ এবং সম্ভাবনা নিয়ে আমরা শান্তি ও উন্নতির দিকে মনোনিবেশ করতে এবং আমাদের পৃথিবীকে একটি স্থায়ী, শান্তিপূর্ণ এবং সাক্ষরিক সমাজ সৃষ্টি করতে পারি। যদি আমরা সবাই একসাথে এই লক্ষ্যে প্রচুর প্রয়াস করি, তাহলে যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই সম্ভব হতে পারে এবং আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি করতে সাহায্য করতে পারি।
শান্তি বিকল্পের মত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, যা সমাজ এবং জীবনে বৃদ্ধি এবং উন্নতি সৃষ্টি করে। শান্তির সাহায্যেই বিভিন্ন দেশের মধ্যে সহযোগিতা, বাণিজ্যিক পরিষ্কারতা, বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি, সাহিত্য এবং শিল্পের আদান-প্রদান সম্ভব হয়। এটি সামাজিক এবং রাজনৈতিক সংজ্ঞান তৈরি করে এবং একটি শক্তিশালী এবং প্রগতিশীল সমাজের আধার তৈরি করে। শান্তি বিজ্ঞানে এবং তত্ত্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে এসেছে। শান্তির প্রতিস্থাপন ও বজায় রাখার জন্য সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতিগুলি তৈরি করা প্রয়োজন। রাজনীতিতে, আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলি শান্তি এবং সুরক্ষা বিষয়ে আলোচনা করে এবং এটি প্রতিস্থাপনে সহায়ক হতে পারে। শান্তি সাধারণভাবে স্থায়ী প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না, এটি একটি নিত্যবর্তী প্রক্রিয়া। যাদের মধ্যে অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক আছে, তাদেরই এই প্রক্রিয়াটি অধিক সহযোগিতামূলক ও ফলপ্রদ হতে সাহায্য করতে পারে। শান্তির ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক উন্নতিরও গুরুত্ব আছে।
আর্থিক সমৃদ্ধি শান্তি ও স্থায়িত্ব সৃষ্টি করতে সাহায্য করতে পারে, যেটি যুদ্ধের সময় অসম্ভাব্য। প্রতিষ্ঠিত অর্থনীতি এবং বাণিজ্যিক সহযোগিতা এই দিকে একটি উত্তাম পরিস্থিতি তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে তুলতে আমরা সবাইকে আগ্রহী হতে হবে। শান্তি এবং সহযোগিতার জন্য আমাদের একে অপরের সম্প্রেরণা এবং মৌলিক অধিকার সম্মান করার প্রতি গভীর আদর্শ থাকতে হবে। এটি একটি দুর্বল দৃষ্টিভঙ্গি নয়, বরং এটি মজবুত এবং সাহসী পথ যা বিভিন্ন সমগ্রতার মধ্যে একত্রিত করতে সাহায্য করতে পারে। শান্তি এবং সহযোগিতা নিয়ে আমাদের মৌলিক দায়িত্ব রয়েছে। এটি আমাদের সকলের দায়িত্ব, একটি আমরা যে সমস্ত বিভিন্নতা এবং আদর্শগুলি মুক্তিযোগ্য ভাবে প্রকাশ করার জন্য একত্রিত হতে পারি এবং একটি শান্ত ও সুখী পৃথিবীর নিবাসকে সম্ভাব্য করার প্রতি আমাদের অবিচল প্রতিশ্রুতি।
পৃথিবীকে একটি বেহাদ সুন্দর স্থান হিসেবে রক্ষা করার জন্য, আমরা সবাই যোগদান করে একটি মহান প্রয়াসে। শান্তি ও সহযোগিতার মাধ্যমে, আমরা একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ পৃথিবী গড়ে তুলতে পারি যেখানে সকল মানবজাতি
শান্তিময় ও সুরক্ষিত ভাবে বাস করতে পারে। যখন মানব সমাজে শান্তি অবশ্যই প্রয়োজন, তখন এটি একটি সাধারণ প্রয়োজনা থেকে বেশি হয়ে যায়। এটি সমাজের প্রতিটি স্তরে প্রয়োজন, যাতে আপাতত: রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক সংগঠন, পরিবার এবং ব্যক্তিগত স্তরে সামাজিক সহিষ্ণুতা এবং বান্ধব্য বাজায় রাখা যায়।
শান্তির অভাব সমাজে বৃদ্ধি ও উন্নতির পথকে বাধা দেয়। যুদ্ধের সময় অস্থির অবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থানের অস্থিরতা এবং মানবিক সম্প্রদায়ের ভাগ বিভাজন সমাজে দুর্বলতা এবং অস্থিরতা তৈরি করে। এটি সমাজে আত্মসংজ্ঞান এবং সহযোগিতা নষ্ট করে, যা আরও বৃদ্ধি এবং উন্নতির সামর্থ্যকে হ্রাস করে।শান্তির অর্জনের জন্য শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম এবং বৌদ্ধিক পরিপ্রেক্ষিত প্রচেষ্টা করা গুরুত্বপূর্ণ। মানব সমাজে সম্পর্ক, সহযোগিতা এবং সহমর্মিতা বৃদ্ধি এবং সমাজের উন্নতি নিশ্চিত করতে এই মূল উপায়গুলি অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ।
শান্তি নিয়ে আমাদের দৃষ্টি পুনর্নির্মাণ করার প্রয়োজন যেহেতু আমাদের বর্তমান পৃথিবী ভিন্নভিন্ন সমস্যার মুখে
সম্প্রতি সৃষ্টি হওয়া দেখা দেয়। যুদ্ধ, বিনামূল্যে জীবন গুজবের মাধ্যম হিসেবে অবশ্যই গভীর মহান্তম সমস্যা সৃষ্টি করে এবং তা সমাধানের পথে অনেকটা বাধা তৈরি করে। এই বাধাগুলি নিম্নলিখিত সাক্ষরিক উন্নতির জন্য প্রোত্সাহন করতে হবে। বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং আর্থ-সামাজিক বিকাশের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের মধ্যে শান্তি স্থাপন করা সম্ভব। শিক্ষা একটি প্রতিষ্ঠানিক মাধ্যম সৃষ্টি করে যা মানবিক সম্পদ এবং বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।বিভিন্ন দেশের মধ্যে বিশ্বসাম্য এবং আদান-প্রদান সৃষ্টি করে এবং এটি বৃদ্ধি করার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পারি।
শান্তির সংরক্ষণ এবং যুদ্ধ এবং সংঘর্ষের প্রতিরোধ করার জন্য সকলেই একসাথে কাজ করতে হবে। আমরা সকল স্তরে শান্তির মূল উপাদানগুলি প্রতিষ্ঠা করতে পারি – রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে সহযোগিতা, বৈশিষ্ট্য ও ধর্ম বৈষম্যের পরিস্থিতি প্রতিষ্ঠা করতে পারি, এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি, ও মানবিক মূল্যানুসারে সমাজ নির্মাণ করতে পারি। মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে হলে , মানবিক সমাজ,রাষ্ট্র, পৃথিবী গড়ে তুলেতে হলে সৃজনশীল চিন্তা ও উন্নত পৃথিবীর জন্য যুদ্ধ বন্ধের বিকল্প নেই। যুদ্ধ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে, ভোগবাদী, দখলদারিত্ব, চরম আত্মকেন্দ্রিকতার চিন্তাকে জাগিয়ে তোলে। ফলে মানুষ দ্বন্ধ, সংঘর্ষ, খুন, হত্যার মতো কাজে নিজেকে জড়িয়ে একটা অমানবিক সমাজ গঠনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যা কোনভাবেই কাম্য নয়।
বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের এই ভয়বহতা থেকে পৃথিবীকে বাঁচানো জরুরী হয়ে পড়েছে। যুদ্ধের এই ভয়বহতা থেকে মুক্তি পেতে সাম্রজ্যবাদী শক্তিগুলোকে অস্ত্র বিরতির সকল শর্ত মানতে হবে এবং সেই সাথে সকল প্রকার অস্ত্র উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। সাম্রজ্যবাদ শক্তিগুলো তাদের অস্ত্র ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে , এই ব্যবসার প্রসার ঘটাতে দেশে দেশে এবং দেশের অভ্যন্তরে নানা কৌশলে যুদ্ধ বাঁধিয়ে রেখেছে।
পৃথিবীর পরাশক্তি দেশগুলো প্রতি বছর সামরিকখাতে যে পরিমাণ ব্যয় করে যদি এক বছর এই ব্যয় সংকোচন
করে তবে সেই পরিমাণ অর্থ দিয়ে গোটা পৃথিবীর মানুষের খাদ্য এবং শিক্ষার নিশ্চয়তা করা সম্ভব হতো। বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ বিরোধী জোড়ালো আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আজকের পৃথিবীর জন্য অস্ত্রের প্রয়োজন নয়, প্রয়োজন মানবিক শক্তি, মূল্যবোধ ও মানবিক শিক্ষার।