স্বপ্ন ছিল তার মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। ও-লেভেলে ডেইলি স্টার অ্যাওয়ার্ড পাওয়া জুবায়ের সাঈদ ম্যাপল লিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে এ আর ও-লেভেল পড়াশোনা শেষ করেন। আর্টে দক্ষ জুবায়ের তার প্রতিভার জন্য ছোটেবেলায়ই রীতিমতো সেলিব্রিটি হয়ে উঠেছিলেন। বিশ্বসেরা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি, সাকিব আল হাসান, মাশরাফি কিংবা মুশফিকুর রহিম— সবার কাছে রয়েছে জুবায়েরের নিজ হাতে করা আর্ট।
পরীক্ষায় ভালো করতে না পারায় মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার সুযোগ হয়নি তার। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলেও কোনোটাতেই উত্তীর্ণ হতে পারেননি। হতাশ হলেও একসময় সিদ্ধান্ত নেন দেশের বাইরে পড়াশোনার। তিনি জাপানের রিটসুমেইক্যান এশিয়ান প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ-তে ৫০% স্কলারশিপ সহ চান্স পান। এরপর জীবনে প্রথমবার বাইরে থাকার অভিজ্ঞতা ভয়ানক কষ্টের ছিল জুবায়েরের জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম সেমিস্টারে সিজিপিএ হয় মাত্র ২.৮৯। নিজের পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য পার্ট-টাইম চাকরি করতেন। জাপানে কাটানো সময় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এসময় আমি ঠান্ডায় বাইরে কাজ করতাম। টয়লেট ও ফ্লোর পরিষ্কারের কাজও করতে হয়েছে। কখনো ভোর ৫টা পর্যন্ত কাজ করে সকাল ৮টায় ক্লাস করেছি।
এরপর নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে পড়াশোনায় ভালো করতে থাকেন তিনি। ১২তম প্রচেষ্টায় মাসিক ১ হাজার ডলার বৃত্তি অর্জন করেন। কাজ কিংবা ইন্টার্নিশিপে ৩৭ বার আবেদন করেও ব্যর্থ হন। তবুও হাল না ছাড়া জুবায়ের স্নাতক হন ৩.৫১ সিজিপিএ নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি প্রেসিডেন্সি অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হন এবং ইউনিভার্সিটি অফ টোকিওতে বৃত্তিসহ স্নাতকোত্তর পড়ার সুযোগ পান। জুবায়ের সেখানে পড়ার সময় বিশ্ববিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অডি থেকে ইন্টার্নশিপের অফার পান। আর পড়াশোনা শেষ করেন সিজিপিএ ৩.৯৪ সিজিপিএ নিয়ে।
৯৬টি কোম্পানিতে আবেদন করার পর তিনি ভোগ্যপণ্যের মার্কিন বহুজাতিক কর্পোরেশন ‘প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল’র জাপানি সবচেয়ে বড় ওয়্যারহাউজে ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেন।