সেন্ট লুসিয়া থেকে মার্টিনিক হয়ে ডমিনিকা যাওয়ার পথে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে টাইগারদের। এর আগে কখনো এত দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রার অভিজ্ঞতা নেই বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। যাত্রাপথে আটলান্টিক মহাসাগরে উত্তাল ঢেউয়ের মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন। এতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সফর পরিকল্পনা নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন। আলোচনা-সমালোচনার মাঝে বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন জানিয়েছেন, নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানো ক্রিকেটাররা ভালো আছেন।
সেন্ট লুসিয়া থেকে বিমানেও যাত্রা করা যায়। তবে সেটি আয়োজন করে স্বাগতিক বোর্ড। উইন্ডিজ বোর্ড ফেরির আয়োজন করেছে। স্বাগতিক বোর্ডের এই প্রস্তাব লুফে নিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু জেনেশুনে ক্রিকেটারদের কেনো এমন ভয়ঙ্কর সমুদ্রযাত্রার দিকে ঠেলে দিল বিসিবি? যেখানে চাইলেই বিমানে যেতে পারতো বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
এর ব্যাখা দিয়েছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দীন চৌধুরী। স্বাগতিক দেশের উপর দায় দিয়ে নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘স্বাগতিক দেশই সফরের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে থাকে। আমরা শুরু থেকেই আমাদের শঙ্কার কথা তাদেরকে জানিয়েছি। ওরা যখন জানাল আর বিকল্প নেই, তখন তাদের ওপর নির্ভর করতে হবে। খেলোয়াড়-স্টাফ মিলিয়ে দুই দলকে নিতে বড় একটা চার্টার্ড ফ্লাইটের দরকার ছিল। সেটার ব্যবস্থা তারা করতে পারেনি। ওরা যখন আমাদের জানিয়েছিল, যেহেতু ম্যাচ অফিশিয়ালসহ দুই দলের ক্রিকেটাররা এক সঙ্গে এভাবে ভ্রমণ করবে, তখন আমরা এটা নিয়ে আপত্তি করিনি।’মূলত আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে নিজাম উদ্দীন বলেন, ‘আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে এটা হয়েছে। নির্ধারিত সূচি থাকার কারণে এটা আর ছাড়তে দেরি করেনি। আর ছাড়ার পর যখন এমন আবহাওয়ার মধ্যে পড়েছে, তখন আর কিছু করার ছিল না। আমাদের অনেক খেলোয়াড় এ ধরনের ভ্রমণে অভ্যস্ত নয়। ওদের খেলোয়াড়েরা অভ্যস্ত বলে তাদের তেমন সমস্যা হয়নি।’অবস্থা বেগতিক দেখে মাঝপথে যাত্রা বাতিল করে মার্টিনিক থেকে বিমানে যেতে চেয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মার্টিনিক দ্বীপ ফ্রান্সের অধীন হওয়ায় এত দ্রুত ভিসা পাওয়া সম্ভব ছিল না। প্রধান নির্বাহী বলেছেন, ‘অর্ধেক পথে অর্থাৎ মার্টিনিকে পৌঁছানোর পর ওরা আমাকে ফোন দিয়েছিল। সেখান থেকে বিকল্প উপায়ে ডমিনিকা যাওয়ার ব্যবস্থা করতে বলেছিল। তখন আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তারা বলেছে যে মার্টিনিকে অন্য কোনো ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে না। কারণ, মার্টিনিক হলো ফ্রান্সের অন্তর্ভুক্ত। সেখানে নানা রকমের কাগজপত্রের হিসাবনিকাশ রয়েছে। সেগুলো দ্রুত সমাধান করা সম্ভব হবে না।’ফলে ভয়, আতঙ্ক নিয়েই পাঁচ ঘণ্টার সমুদ্রযাত্রা শেষ করতে হয়েছে ক্রিকেটারদের। এমন পরিস্থিতির কারণে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রিকেটাররা।