প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ জাতীয় পার্টির (জাপা) সকল পদ থেকে মশিউর রহমান রাঙ্গাকে অব্যাহতি দেওয়াকে কেন্দ্র করে রংপুরে পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও রাঙ্গা সমর্থিত নেতাকর্মীদের মাঝে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে৷ এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে নগরীর স্টেশন রোড এলাকায় মোটর মালিক সমিতি ও জাতীয় পার্টির একাংশের নেতাকর্মীরা জিএম কাদেরের কুশপুত্তলিকা দাহ করে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি গ্রান্ড হোটেল মোড় এলাকায় পৌঁছলে জিএম কাদের সমর্থিত নেতাকর্মীরা ধাওয়া করে৷ এ সময় উভয়পক্ষের ছোড়া ইট পাটকেলে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এরপর জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নেতৃত্বে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে জিএম কাদেরের সমর্থনে ও রাঙ্গা গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। এসময় মশিউর রহমান রাঙ্গারও কুশপুত্তলিকা দাহ করা।
মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা এসএম ইয়াসির আহমেদ বলেন, ‘রাঙ্গা ভাই আমাদের বড় ভাই। তিনি দলের চেয়ারম্যানকে রংপুরে ঢুকতে দেবেন না বলে মন্তব্য করা ঠিক করেননি। যেকোনো মানুষ যেকোনো জায়গায় যেতে পারে। এটি তার সাংবিধানিক অধিকার। যদি তাকে রংপুরে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়, তবে চেয়ারম্যানকে পার্টির লোকজন নিরাপত্তা দেবে। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তো আছেই।’
জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিগত সময়ে বিভিন্ন নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অব্যাহতি মানে দল থেকে বহিষ্কার নয়। রংপুরের জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ আছে। আশা করছি দলের চেয়ারম্যান ও রাঙ্গা ভাইয়ের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং দলে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে কাঁদা ছোড়াছুড়ি, দলকে নষ্ট করতে চাওয়া, দলের বিভাজন করে দলের শক্তি খর্ব করা মোটেই কাম্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের রাজপথের সহযাত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা রংপুরের মাটিতে জিএম কাদেরকে নামতে দেবেন না বলেছেন। আমরা বলতে চাই, রংপুরের মাটি কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। কিংবা কাউকে লিজ দেয়া হয়নি। দলের চেয়ারম্যান চাইলে রংপুরে আসতে পারবেন। আমরা দলের নেতাকর্মীরা থাকতে তাকে কেউ বাধা দিতে পারবে না।’
এ সময় জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে মসিউর রহমান রাঙ্গাকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।