রবীন্দ্রনাথ ও জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় সঙ্গীতশিল্পী মইনুল আহসান নোবেলকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন চট্টগ্রামের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিঠুন বিশ্বাস।নোটিশে তার পেজ থেকে স্ট্যাটাস দুটি অপসারণ ও অপরাধ স্বীকার করে প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।
রোববার মইনুল আহসান নোবেলের ঢাকার ডেমরার ঠিকানায় উকিল নোটিশটি পাঠিয়েছেন।সঙ্গীতশিল্পী নোবেল গত ১০ ও ১১ আগস্ট নিজের ফেসবুক থেকে স্ট্যাটাস দুটি পোস্ট করেন।এরপরই তাকে আইনি নোটিশ পাঠানো হলো।
ডাকযোগে নোটিশ পাঠানোর কথা নিশ্চিত করে আইনজীবী মিঠুন বিশ্বাস বলেন,লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে,সঙ্গীতশিল্পী মইনুল আহসান নোবেল গত ১০ ও ১১ আগস্ট নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ‘আসুন! রবীন্দ্রনাথের সোনার বাংলা পরিত্যাগ করে আমার সোনার বাংলাকে ভালোবাসি।ভারতের চাটুকারিতা করতে করতে এখন নিজেকে গো-মূত্র সেবনকারী মনে হয়।ইয়াক থু!!’এবং ১০ আগস্ট ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তার রাবীন্দ্রিক সাহিত্যচর্চা অবিলম্বে বাংলাদেশ থেকে বয়কট করা হউক।আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল!বিদ্রোহী কবি,যখন আমাদের অধিকার আদায়ে সক্রিয় ছিলেন,রোজ রোজ ব্রিটিশদের কাছে কারাবন্দি হতেন,কনডেম সেলে টর্চারের শিকার হচ্ছিলেন,তখন ব্রিটিশদের চাটুকারিতা করে সো-কল্ড বিশ্বকবি বিন্দাস আমাদের বাপ-দাদার রক্ত চুষে খাচ্ছিল,’ এই দুটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেন।
ওই স্ট্যাটাস দুটিতে নোবেল বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটির বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে কুৎসা,বিদ্বেষ প্রচার করেছেন।এছাড়া গানটির রচয়িতা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অন্যায়ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অসৎ উদ্দেশ্যে কটাক্ষ করেছেন।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়,আপনি নিশ্চয় অবগত আছেন ‘আমার সোনার বাংলা,আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি শুধু আমাদের জাতীয় সঙ্গীত নয়,বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসারও এক অনন্য বহিঃপ্রকাশ।জাতীয় সঙ্গীত বলেই এর মর্যাদাও সর্বোচ্চ।সে কারণে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের সংবিধান দ্বারা সংরক্ষিত ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটির বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রোপাগান্ডা ও প্রচারণা চালানো বা মদদ প্রদান করাকে দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
লিগ্যাল নোটিশে আরো বলা হয়েছে,নোবেলের ফেসবুক পেজে প্রচারিত স্ট্যাটাস দুটিতে ইচ্ছাকৃতভাবে মনগড়া,ভিত্তিহীন,কাল্পনিক,মানহানিকর ও বিদ্বেষমূলক আপত্তিকর মন্তব্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধাচার এবং এর রচয়িতা বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবি,সাহিত্যিক বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক,মিথ্যা,ভিত্তিহীন,মানহানিকর,বিদ্বেষমূলক অপপ্রচারের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক প্রতিটি নাগরিকের হৃদয়ে আঘাত করেছেন।যা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
সেখানে বলা হয়,ওই নোটিশ পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজ নামের পেজে প্রচারিত উল্লেখিত বিদ্বেষমূলক,মিথ্যা,মানহানিকর স্ট্যাটাস দুটি অপসারণ করে নিজের কৃত অপরাধ স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন।অন্যথায় নোবেলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধাচার ও এর রচয়িতা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে বিদ্বেষমূলক,মিথ্যা,কুরুচিপূর্ণ,বানোয়াট,মানহানিকর বক্তব্য ডিজিটাল মাধ্যম তথা নিজের ফেসবুক পেজে প্রচারের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় যথাযথ আদালতে মামলা দায়েরসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।