ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পরে সিংহাসনে বসেছেন তৃতীয় চার্লস। দেশের অধিকাংশ মানুষের শোকের আবহেই মাথা চাড়া দিচ্ছে ব্রিটেনবাসীর বিক্ষোভ। রাজপরিবারের গুরুত্ব একেবারে ছেঁটে ফেলা হোক, এই দাবিতে সরব হয়েছেন ব্রিটেনের বেশ কিছু সাধারণ মানুষ। তাদের গ্রেপ্তারও করছে ব্রিটেনের পুলিশ। প্রতিবাদীদের নানাভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে। দেশে বাক স্বাধীনতার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে বলেই দাবি তাদের।
বহুদিন ধরেই ব্রিটিশ জনতার একাংশের দাবি, রাজতন্ত্রকে দেশ থেকে নির্মূল করা হোক। রাজপরিবারের ভরণপোষণ করতে দেশের অর্থনীতির উপরে চাপ পড়ে বলেই মত জনতার একাংশের। ৭০ বছর ধরে রাজত্ব করার পরে যখন এলিজাবেথের মৃত্যু হয়েছে, তারপর থেকেই নতুন করে রাজতন্ত্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রানির মরদেহ এডিনবরা থেকে লন্ডনে নিয়ে আসার সময়েই একজন মহিলা রাজতন্ত্রের বিরোধী পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ
সোমবারও “নট মাই কিং” লেখা একটি পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এক মহিলা। তাকে টেনে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই ব্রিটিশ জনতার? গ্রেপ্তার হওয়ার পরে ওই মহিলা বলেছেন, “কেউ ভোট দিয়ে চার্লসকে জেতায়নি। তাই তাকে রাজা হিসাবে মেনে নেওয়া যায় না।” একই ধরনের মন্তব্য করে গ্রেপ্তার হয়েছেন অক্সফোর্ডের এক ব্যক্তি। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ট্রেন্ড হয়েছে #নটমাইকিং।
ব্রিটেনের অনেকেই রাজতন্ত্রের ইতি চাইলেও, সামগ্রিক হিসাবে তাদের সংখ্যা খুবই কম। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, ব্রিটেনের ৬২ শতাংশ মানুষই চান, বহাল তবিয়তে বেঁচে থাকুক দেশের রাজতন্ত্র। অন্যদিকে ২২ শতাংশ মানুষ চাইছেন, রাজতন্ত্রের পরিবর্তে দেশের প্রশাসনের ভার থাকুক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতেই। বহুদিন ধরেই ব্রিটেনকে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন জনসাধারণের একাংশ। এলিজাবেথের মৃত্যুর পরে সেই প্রশ্ন ফের উসকে গেল। তবে খুব তাড়াতাড়ি ব্রিটেন থেকে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হবে, সেরকম সম্ভাবনা আপাতত নেই।