২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন দাবিতে রাজনৈতিক দলগুলো জানুয়ারির প্রথম দিকে সারাদেশে চলমান সমাবেশ ও বিক্ষোভ অব্যাহত রাখবে। প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আগামী ১৮ ডিসেম্বর দেশব্যাপী একদিনের হরতালের পরিকল্পনা করেছে। এসব কারণে অনেকটা নিশ্চিতভাবেই সারাদেশে বিভিন্ন মাত্রায় পরিবহন এবং ব্যবসায়িক পরিষেবাগুলো ব্যাহত হবে। কিছু দিনের জন্য ব্যবসায়িক ক্রিয়াকলাপ বন্ধ করতে বাধ্য করা হতে পারে।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৈশ্বিক ঝুঁকি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ‘ক্রাইসস ২৪’ শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ১৩তম প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
পর্যবেক্ষণে তারা জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহগুলোতে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল বিভিন্ন ধরণের বিক্ষোভ করতে পারে। এ ধরনের যে কোনো কর্মসূচির সময় পাল্টা পরক্ষেপগুলো সংক্ষিপ্ত নোটিশে বাস্তবায়িত হতে পারে। সম্ভাব্য জমায়েতের স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে পুলিশ স্টেশন এবং নির্বাচন কমিশন অফিসসহ বিশিষ্ট সরকারি ভবন। পাশাপাশি পাবলিক প্লেস, রাজনৈতিক দলের অফিস, ক্রীড়া মাঠ, মসজিদ, প্রেস ক্লাব এবং প্রধান রাস্তাগুলোতে জমায়েত হতে পারে।
প্রতিবেদনে ক্রাইসিস ২৪ বলছে, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে সাধারণ নির্বাচন পরিচালনার দাবিতে বিএনপিসহ সমমনা সংগঠনগুলো বিক্ষিপ্তভাবে পরিবহন অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচির পরিকল্পনা করছে। অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের বিচ্ছিন্ন ঘটনাসহ বেশ কয়েকবার সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর আগে বাংলাদেশ সচিবালয়, নির্বাচন কমিশন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও অবরোধের হুমকি দিয়েছিল আন্দোলনকারীরা। পূর্ববর্তী এসব কর্মসূচি চট্টগ্রাম এবং ঢাকার মতো প্রধান শহুরে কেন্দ্রগুলোতে লক্ষ লক্ষ অংশগ্রহণকারীকে আকৃষ্ট করেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশজুড়ে, বিশেষত প্রধান শহুরে কেন্দ্রগুলোতে বর্ধিত নিরাপত্তা উপস্থিতি বজায় রাখছে। নিরাপত্তাজনিত ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় কর্মকর্তারা গণগ্রেপ্তার করতে পারেন। পুলিশ লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসসহ শক্তি প্রয়োগ করতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ ও প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক শিবিরের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলে মনে করে ক্রাইসিস ২৪। তারা আশঙ্কা করছে, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরসহ আরও বিচ্ছিন্ন নিরাপত্তাজনিত ঘটনা ঘটতে পারে। সংশ্লিষ্ট স্থানীয় পরিবহন এবং ব্যবসায়িক ব্যাঘাতের সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি।
এ অবস্থায় বিদেশিদের জন্য বেশ কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছে ক্রাইসিস ২৪। সেগুলো হলো: সহিংসতার ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনার কারণে সমস্ত বিক্ষোভ এড়িয়ে চলুন। যে কোনো নিরাপত্তা বিঘ্নের প্রথম লক্ষণে অঞ্চলটি ত্যাগ করুন। জমায়েতের স্থানগুলোর কাছাকাছি অতিরিক্ত যাতায়াত কমিয়ে দিন। স্থানীয় ব্যবসায়িক ব্যাঘাতের জন্য সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করুন। আপনার কূটনৈতিক মিশনের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখুন। সমস্ত সরকারি পরিবহন এবং নিরাপত্তা পরামর্শ মেনে চলুন।