রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালেয়ে (রাবি) ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির সাথে ‘জড়িত’ এক ছাত্রলীগ নেতার নাম প্রকাশ করেছেন প্রক্সি (বদলি পরীক্ষা) দিতে গিয়ে আটক হওয়া এক শিক্ষার্থী। ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম মুশফিক তাহমিদ তন্ময়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। গত মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) প্রক্সি দিতে গিয়ে ধরা পড়া বায়োজিদ খানকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি তন্ময়ের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
ওইদিন জিজ্ঞাসাবাদের সময় করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে কার নির্দেশে সে প্রক্সি দিতে এসেছেন। তখন সে তার বন্ধু তন্ময়ের নাম বলে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি আরোও বলেন, প্রক্সি দিতে সকালে ক্যাম্পাসে এসেছেন। প্রক্সি দেওয়ার পূর্বে তিনি তার ব্যক্তিগত ফোন তন্ময়ের কাছে জমা রেখেছিলেন। তন্ময় শাহ মখ্দুম হলে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি প্রক্টর দপ্তরের জিজ্ঞাসাবাদের সময় করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রক্সি জালিয়াতিতে ধরা পড়া বায়োজিদ একেক সময় একেক নাম বলেছেন। একাধিক নাম এসেছে। সেখানে মুশফিক তাহমিদ তন্ময়ের নামও বলেছেন। এটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত করে দেখবে। তারা এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাহ মখ্দুম হলে থাকেন ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদ তন্ময়। তিনি প্রক্সির দায়ে এক বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত বায়োজিদের সহপাঠী ও রাবির ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। এর আগেও তার বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্য, সিট বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠে। এই নিয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদ তন্ময়কে একাধিকবার ফোন করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। এ নিয়ে আমি আমার সভাপতির সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিব এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে অবহিত করব।
গত ২৬ জুলাই ‘এ’ ইউনিটের (মানবিক) ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে প্রক্সির দায়ে চারজনকে আটক করা হয়। আটকের পর তাদেরকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমান আদালত। দণ্ডিতরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের মাস্টার্সের (স্নাতকোত্তর) শিক্ষার্থী এখলাসুর রহমান ও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মেহজাবিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী বায়েজিদ খান এবং খুলনার কাজী মেডিকেল কলেজের প্রভাষক সমীর রায়। বর্তমানে তারা রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।