জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনগণের উপর থেকে মূল্যস্ফীতির বোঝা কমাতে সাড়ে ছয় হাজার কোটি ইউরো তহবিল ঘোষণা করেছে জার্মানির সরকার। শীত মৌসুমে এই অর্থ ব্যয়ের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস।
জার্মান জোট সরকারের শরিকরা রোববার এজন্য ছয় হাজার ৪৭০ কোটি ইউরো বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ছয় লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সম্মত হয়েছে। এটি দেশটির সরকারের এই ধরনের ‘তৃতীয় উদ্ধার তহবিল’।
এই অর্থে স্বল্প খরচে গণরিবহণে ভ্রমণ এবং জ্বালানি নির্ভর কোম্পানিগুলোকে কর ছাড় দেওয়া হবে।
জার্মানির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের হিসাবে আগস্টে দেশটির মূল্যস্ফীতি বেড়ে আট শতাংশে পৌঁছেছে। জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি এতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে।
পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদি পণ্যের দাম জুনে ১২ শতাংশ বৃদ্ধির পর আগস্টে বেড়েছে ১৬ দশমিক ছয় শতাংশ। এই পরিস্থিতি থেকে জনগণকে স্বস্তি দিতে গত তিন মাসে গণপরিবহণে মাসে মাত্র নয় ইউরোতে ভ্রমণের সুযোগ করে দেয় সরকার। পাশাপাশি বিভিন্ন পর্যায়ে কর ছাড়ও দেওয়া হয়।
রোববারের নতুন সিদ্ধান্তের পর চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস সাংবাদিকদের বলেন, ‘গণপরিবহণে স্বল্পমূল্যের টিকেট অব্যাহত রাখতে তার সরকার ১৫০ কোটি ইউরো ভর্তুকি দেবে। জ্বালানি সরবরাহ কোম্পানিগুলো যেন ক্রেতাদের কম খরচে তেল, গ্যাস ও কয়লা সরবরাহ করতে পারে এজন্য কর ছাড় দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলতি বছর আরও দুইটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল জার্মান সরকার। এর একটি ছিল পেট্রলের উপর করছাড় এবং অন্যটি নয় ইউরোর টিকেটে গোটা জার্মানি ভ্রমণের সুযোগ। এই দুই প্যাকেজেরই মেয়াদ আগস্টে শেষ হয়েছে। এমন অবস্থায় নতুন করে তৃতীয় প্যাকেজের ঘোষণা দিল জার্মান সরকার।
এদিকে, জার্মানির পক্ষে অল্প সময়ের মধ্যে রাশিয়ার গ্যাসের বিকল্প জ্বালানি বের করা বেশ কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ ওলাফ শলৎস।
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানি নিয়ে বেকায়দায় আছে জার্মানিসহ ইউরোপের দেশগুলো।
দেশটির ক্ষমতাসীন স্যোশাল ডেমোক্রেট দলের রাজনৈতিক নেতারা মনে করছেন, গ্যাসকে বার্লিনের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে মস্কো।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের বিরোধীতা করায় জর্মিানিতে গ্যাস সরবরাহ কন্ধ করে দিয়েছে মস্কো।
ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে উদ্বৃত্ত গ্যাস পুড়িয়ে ফেলছে রাশিয়া।
ইউক্রেনে হামলার আগে জার্মানির মোট চাহিদার ৫৫ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ করতো রাশিয়া।
ইউক্রেনের হামলার পর রাশিয়া গ্যাস সরবরাহ অর্ধেকের বেশি কমিয়ে দেয়। ২০২৪ সাল নাগাদ জার্মানি গ্যাসের ওপর নির্ভশীলতা ১০ শতাংশে কমিয়ে আনবে বলে জানান ওলাফ শলৎস।