রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে রোহিঙ্গা সংকটের পাঁচ বছরপূর্তি উপলক্ষে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের একার সংকট নয়। এটি একটি বৈশ্বিক সংকট। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা সংকট যে একটি বৈশ্বিক সংকট আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সে বিষয়ে যথাযথভাবে উদ্ধুব্ধ কিংবা কনভিন্স করতে পারেনি। বিশ্বের অন্যান্য মানবিক সংকটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেভাবে সাড়া দেয় বা তৎপর হয়, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তারা সেভাবে এগিয়ে আসেনি। এটা নিঃসন্দেহে সরকারের চরম কূটনৈতিক ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই না।’
ফখরুল বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যার মূল চ্যালেঞ্জ তথা নিরাপদ রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়াটি একেবারেই স্থবির হয়ে পড়েছে। সরকার তাদের প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই সংকটকে এখন আর গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না বিশ্ব। ২০২১ সালে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন ইস্যুটি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। এই পটভূমিকায় বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি আন্তর্জাতিক সংহতি এখন আগের চেয়ে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। ভারত, চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের দেশগুলোসহ আন্তর্জাতিক মহল আরও কার্যকরী ও ফলপ্রসূ চাপ না দিলে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠানো সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি। এজন্য বাংলাদেশ সরকারকে আরও জোরালো রাজনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনকে শুধুমাত্র চুক্তিতে বন্দি না রেখে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় চুক্তির কার্যকর প্রয়োগের পথে এগুতে হবে। এই সংকট সমাধানে জাতিসংঘ, আঞ্চলিক সংস্থা, বিশ্ব পরাশক্তিগুলোর স্ব স্ব ভূমিকা সুনিশ্চিত করতে হবে। কার্যকর কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে জাতিসংঘসহ আঞ্চলিক মহলকে বাংলাদেশের সীমাবদ্ধতার কথা উপলব্ধি করাতে হবে।
এই সরকারের চরম ব্যর্থতা যার মূল হচ্ছে, তাদের নেগোসিয়েটিং ক্যাপাসিটি নেই। ওরা একটি অনির্বাচিত, অবৈধ, দখলদার সরকার হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিকভাবে যখন নেগোসিয়েট করবে জাতির সমর্থন যেখানে থাকবে না সেই নেগোসিয়েশন সফল হতে পারে না। তাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে একটা অনির্বাচিত সরকার হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক নেগোসিয়েশনে তারা চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। এটাতে পুরো জাতির একটা কনসেন্সের ব্যাপার আছে যেটা তাদের নেই।