অ্যাশেজের লর্ডস টেস্ট শেষ হয়েছে গত ২ জুলাই। তবে এখনও ম্যাচটি নিয়ে আলোচনা চলছেই। ম্যাচটিতে ইংল্যান্ডের জনি বেয়ারস্টোকে অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক আ্যালেক্স ক্যারির স্ট্যাম্পিং নিয়ে চলছে তর্ক-বিতর্ক। এই আউট নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কম হয়নি। ঐ আউট নিয়ে এতোদিনে মুখ খোলেন ক্যারি। তিনি জানান, সুযোগ পেয়ে আবারও লর্ডসের মত স্ট্যাম্পিং করবেন।
লর্ডসে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট জিততে ৩৭১ রানের টার্গেট পেয়েছিলো ইংল্যান্ড। ১৭৭ রানে ইংল্যান্ডের পঞ্চম উইকেট পতনের পর সাত নম্বরে ব্যাট করতে নামেন বেয়ারস্টো। ইনিংসের ৫২তম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার পেসার ক্যামেরুন গ্রিনের শেষ ডেলিভারির বাউন্সার মাথা নিচু করে ছেড়ে দেন বেয়ারস্টো। বল অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক ক্যারির হাতে জমা হতেই উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে যান বেয়ারস্টো। ওভার শেষ হওয়ার কারণেইই ক্রিজে ছেড়েছিলেন তিনি।
বেয়ারস্টো বেরিয়ে যেতেই আন্ডারআর্ম থ্রোতে স্ট্যাম্প ভাঙেন ক্যারি। সঙ্গে সঙ্গে আবেদন করে অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা। অস্ট্রেলিয়ানদের আউটের আবেদনে অন ফিল্ড আম্পায়াররা সাড়া না দিলেও বেয়ারস্টোকে স্ট্যাম্প আউট ঘোষণা করেন থার্ড আম্পায়ার। এরপরই ঐ আউট নিয়ে শুরু হয় বির্তক। লর্ডসের লং রুমে অস্ট্রেলিয়ান দুই ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নার ও উসমান খাজার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন এমসিসির সদস্যরা। এমন ঘটনায় দুঃখ প্রকাশের সঙ্গে তিনজন সদস্যকে নিষিদ্ধও করে এমসিসি।
বেয়ারস্টোর ওমন আউটেই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়। ৪৩ রানে ম্যাচ জেতে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস বলেন, অস্ট্রেলিয়ার মত এভাবে কখনও ম্যাচ জিততে চান না তারা। ইংলিশ প্রধান কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম বলেন, অস্ট্রেলিয়ার জায়গায় থাকলেও আমরা বেয়ারস্টোকে আবারও ব্যাটিংয়ের জন্য ডাকতাম। নিয়ম মেনেই ক্রিকেট খেলা উচিত সবার।
দীর্ঘদিন পর বেয়ারস্টোর আউট নিয়ে মুখ খুললেন ক্যারি। ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমকে ক্যারি বলেন, ‘পরিকল্পনা ছিল বাউন্সার মারা হবে। প্রথম মুভমেন্টেই সে ক্রিজের অনেক বাইরে গিয়েছিল, আমি সহজেই বল ধরার পর স্ট্যাম্পে ছুঁড়ে মারি। আর বাকিটাতো ইতিহাস। একবার স্ট্যাম্পের বেইল পড়ে গেলে এটিকে আউট বা নট আউট মনে করা তৃতীয় ও অন ফিল্ড আম্পায়ারের উপর নির্ভর করে। এটি কিভাবে হয়েছে সেটি কিছুটা আশ্চর্যজনক।’
ইংল্যান্ডের সমর্থক ও খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সমালোচিত হওয়ার পরও আবারও কি একইভাবে আউট করবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে ক্যারি অকপটে জানান, এমন আউট আবারও করবেন। তিনি বলেন, ‘যদি এমন স্ট্যাম্পিংয়ের সুযোগ আবার আসে, আমি অবশ্যই করবো।’
ক্যারিয়ারের শুরুতে অ্যাডিলেড ‘এ’ গ্রেডে অভিষেক ম্যাচে বেয়ারস্টোর মত বির্তকিত আউটের শিকার হয়েছিলেন ৩১ বছর বয়সী ক্যারি। স্ট্যাম্প আউট হওয়ার পর থেকেই ব্যাটিংয়ের সময় ক্রিজে থাকতে শেখেন তিনি।
ক্যারি বলেন, ‘দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় আমার প্রথম ‘এ’ গ্রেডের ম্যাচে আমি এভাবেই আউট হয়েছিলাম। যখন আমি প্যাভিলিয়নে ফিরে যাই, তখন আমি বেশ হতাশ হয়েছিলাম। প্রতিপক্ষ অধিনায়ক আমার কাছে এসে বললেন, পরের বার ক্রিজের লাইনের ভেতরে পা রাখার কথা মনে রাখবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আগে যখন এমনটা করার চেষ্টা করেছি তখন ক্রিকেটের স্পিরিট সম্পর্কে আমাকে বলা হয়নি এবং যখন আমাকে একই উপায়ে আউট করা হয়েছিলো, এটি নিয়ে আমি কোন প্রশ্ন করিনি।’